Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ পাচারকারীদের উৎসাহিত করবে: সিপিডি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ জুন ২০২২ ১২:১৪ | আপডেট: ১০ জুন ২০২২ ১৬:৪৫

ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটিকে ভ্রান্ত ও অনৈতিক পদক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। সংস্থাটি মনে করছে, এর ফলে পাচারকারীরা আরও উৎসাহিত হবে।

শুক্রবার (১০ জুন) সকালে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়। প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিপিডি। বাজেটের পর্যালোচনার বিস্তারিত তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- লক্ষ্যের সঙ্গে বাজেটের পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়: সিপিডি

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী বিদেশে অবস্থিত যেকোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না। বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে এর ওপর ১৫ শতাংশ, বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে ১০ শতাংশ ও বাংলাদেশে পাঠানো (রেমিটকৃত) নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ হারে করারোপের প্রস্তাব করেন তিনি। এ সুবিধা ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে সিপিডি’র ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এই উদ্যোগের ফলে সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত হবেন। যারা অবৈধভাবে বাইরে টাকা নিয়ে যায়। এর মাধ্যমে প্রকান্তরে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা নিয়ে গেছে, তাদের সুযোগ দেওয়া অনৈতিক। এই উদ্যোগ কোনো সফলতা বয়ে আনবে না। এছাড়া অবৈধ অপ্রত্যাশিত, অবৈধভাবে অর্জিত যে আয় সেটা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। সেক্ষেত্রেও আমরা তেমন একটা সাফল্য দেখতে পাচ্ছি না। রাজস্ব বাড়ানোর জন্যে এই যে উদ্যোগগুলো নেওয়া হচ্ছে, এটি একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। এভাবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের প্রক্রিয়া একেবারেই ভ্রান্ত ও অনৈতিক পদক্ষেপ।

বাজেট পর্যালোচনায় সিপিডি’র সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নৈতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে অগ্রহণযোগ্য। তারা (অর্থ পাচারকারী) দেশের প্রচলিত আইন ভেঙেছে। এ ধরনের উদ্যোগ নীতি ও নৈতিকতার সঙ্গে খাপ খায় না। এর আগে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে তেমন লাভ হয়নি। আমার ধারণা যে উদ্যোগ (পাচার করা অর্থ কর দিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনা) নেওয়া হয়েছে, তাতেও কোনো লাভ হবে না।

আরও পড়ুন- কর দিলে বৈধ হবে পাচার করা টাকা, কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবেন না

এই উদ্যোগ বরং সৎ করদাতাদের কর দিতে নিরুৎসাহিত করবে এবং এর ফলে অর্থ পাচারের প্রবণতাও বাড়তে পারে বলে মনে করেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, যারা সৎ করদাতা, এতে তারাও দেশের বাইরে টাকা পাচার করে আবার দেশে ফেরত আনতে উৎসাহিত হবেন। এতে অর্থ পাচার বাড়বে। রাজনৈতিক দিক থেকেও এটি গ্রহণযোগ্য হবে না। জনগণের কাছে এটি বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করা যাবে না।

পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার এই উদ্যোগের সমালোচনা করে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বেনামি টাকা বা পাচার হওয়া টাকা কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ সৎ করদাতাদের ওপর স্রেফ চপেটাঘাত।

বাজেট পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে সিপিডির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/ইএইচটি/এএম

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ২০২২-২৩ বাজেট বাজেট প্রতিক্রিয়া সিপিডি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ

বিজ্ঞাপন

রিশাদ-জাহানদাদে কুপোকাত সিলেট
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:২১

আরো

সম্পর্কিত খবর