পদ্মাসেতু নয়, টাকা পাচারেই বিএনপির গায়ে জ্বালা: মির্জা ফখরুল
২৬ মে ২০২২ ১৬:০০ | আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ১৮:৪৪
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “পদ্মাসেতু নয়, মেগা প্রকল্পের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশ পাচারেই বিএনপির ‘গায়ে জ্বালা’।”
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘কালজয়ী রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে জিয়া পরিষদ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
এর আগে, বুধবার (২৫ মে) এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মাসেতুর কারণে সারাদেশের মানুষ খুশি হলেও বিএনপি ও তাদের দোসরদের বুকে অনেক জ্বালা সৃষ্টি হয়েছে।’
এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের গায়ে নাকি জ্বালা হচ্ছে। গায়ে তো জ্বালা হচ্ছেই। গায়ে জ্বালা হচ্ছে পদ্মাসেতুর কারণে নয়, আমাদের গায়ে জ্বালা হচ্ছে এই জন্য যে পদ্মাসেতু থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে ওরা বিদেশে সম্পদ করছে- এখানেই আমাদের গায়ে জ্বালা হচ্ছে। কারণ এটা আমাদের টাকা, আমাদের কষ্টার্জিত টাকা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার তো এখন গদগদ হয়ে গেছে। সারাক্ষণ শুধু পদ্মাসেতু, পদ্মাসেতেু, পদ্মাসেতু নিয়ে বলছে। পদ্মাসেতু তো কারও পৈত্রিক সম্পত্তি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে না। পদ্মাসেতু এদেশের মানুষের পকেটের টাকা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। সমস্যাটা কোথায়? যেটা করতে লাগত ১০ হাজার কোটি টাকায়। সেটা তৈরি করা হচ্ছে এখন ৩০ হাজার/৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই মেট্রোরেল দেখছেন। মিরপুর থেকে যদি দেখেন কিছুক্ষণ পর পর স্টেশন। এর কোনো প্রয়োজন নেই। আগারগাঁওতে একটা, তারপরে শেওলাপাড়ায় একটা, তারপরে এসে সংসদ ভবনের ওখানে আরেকটা, এরপর ফার্মগেটে একটা। এতো কাছাকাছি স্টেশন পৃথিবীর আর কোথাও দেখিনি। কারণ কী? একটাই যে, অনেক টাকা পাওয়া যাবে। এদের লক্ষ্য হচ্ছে দুর্নীতি, এদের লক্ষ্য হচ্ছে লুট, এদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে লুটে নিয়ে যাওয়া।’
মেগা প্রকল্পের নামে সরকার দেশকে ‘ঋণগ্রস্থ’ করে ফেলেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশকে ঋণের গভীরে নিয়ে গেছে। আমরা পুরোপুরি ঋণগ্রস্থ হয়ে গেছি। আমরা বুঝতে পারছি না, আমরা চাকচিক্য দেখে অনেকে মনে করছি কত কী।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সংকট আমাদের বাংলাদেশের অস্তিত্বের সংকট। আমরা যদি এটাতে জয়যুক্ত না হতে পারি আমাদের গণতন্ত্র বলুন, আমাদের অর্থনীতি বলুন, আমাদের সমাজ বলুন, আমাদের ভবিষ্যৎ বলুন সব কিছু ধবংস হয়ে যাবে।’
জিয়াউর রহমান জীবন-কর্মের ওপর জিয়া পরিষদকে আরও গবেষণা করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জিয়া পরিষদকে অনুরোধ জানাব আপনারা দয়া করে গবেষণার কাজগুলো করার চেষ্টা করেন এবং ইয়াং ব্লাড সংগঠনের নিয়ে আসুন। আমরা যারা পুরনো হয়ে গেছি আমরা অনেক কিছুই পারি না। কিন্তু ইয়াং যারা আছেন তারা অনেক কিছু পারেন, তাদের দায়িত্ব দেবেন এবং দেখবেন তারা অনেক বেশি কাজ করতে পারবে এবং গতিশীলতা আনতে পারবে।’
জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক মুজিবুর রহমান হাওলাদার, অধ্যাপক আবু জাফর খান, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস