অজ্ঞান করে প্রেমিককে গলা কেটে হত্যা করলো প্রেমিকা
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২২:১৭
নরসিংদী: ভালোবেসেই শ্রাবন্তী আক্তারকে (২০) গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেছিলেন মো. মাঈনুল মীর (২৩)। দু’জনের পরিবার রাজি না থাকায় গোপনে ‘কোর্ট ম্যারেজ’ করেন তারা। মীরের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার দক্ষিণ চরপাড়া গ্রামে। আর শ্রাবন্তীর বাড়ি নরসিংদী সদর থানার কামাড়গাঁও গ্রামে।
তবে বিয়ের মাত্র ৬ দিনের মাথায় সাবেক প্রেমিকার হাতেই খুন হলেন মীর। অন্য মেয়েকে বিয়ের কথা জানতে পেরে কৌশলে মীরকে ডেকে নিয়ে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে গলায় ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করেন সাবেক প্রেমিকা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ইসরাত জাহান মীম (২০)। গতকাল শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে মীমকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) তদন্ত সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন, মীমই এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। নিহত মাইনুল হক মীর ঘোড়াশাল দক্ষিণ চরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল ফেলু মীরের ছেলে। আর ইসরাত জাহান মীম উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের ইমরান হোসেনের মেয়ে।
গ্রেফতারকৃত মীমের তথ্যের বর্ণনা দিয়ে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, মীম ও মাইনুল স্কুল জীবন থেকেই একে অপরের পরিচিত। একসময় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বছরের মাঝামাঝি মীম আরেক ছেলেকে বিয়ে করেন। তবে তিন মাস পর সেই বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর আবার মীরের সঙ্গে পুরোনো সম্পর্ক জোড়া লাগে মীমের। কিন্তু এরই মাঝে শ্রাবন্তীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন মাইনুল। গোপনে একইসঙ্গে দু’জনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালাতে থাকেন মীর।
দু’জনই পরিবারকে না জানিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি শ্রাবন্তীকে বিয়ে করেন পেশায় দাঁতের চিকিৎসকের সহকারী মাইনুল। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে নিজ বাসায় বসবাস করতে থাকেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, মীরের বিয়ে করার কথা জানতে পেরেই চেতনানাশক ইনজেকশন কেনেন মীম। কৌশলে মীরকে তার কর্মস্থলে ডেকে নেন। কেন তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা করা হলো না, সেটা জানতে চান। একপর্যায়ে মীরের ঘাড়ে ইনজেকশন পুশ করে অজ্ঞান করেন মীম। এরপর ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে মাইনুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায় মীম।
মীমের বর্ণনা অনুযায়ী, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি করায় চেতনানাশক ইনজেকশন ও তা দ্রুত পুশ করার ব্যাপারে তার অভিজ্ঞতা ছিল। ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে হত্যাকাণ্ড শেষ করেন তিনি। এরপর ছুরি, মোবাইল ও সিরিঞ্জ ঘোড়াশাল এলাকার নিকটবর্তী শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেন।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সাইদুর মীর বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ইসরাত জাহান মীমকে গ্রেফতর করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না সে বিষয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সারাবাংলা/এমও