মুরাদ হাসান এখন সাবেক
৭ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:০৫ | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:১৮
ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর ফলে তিনি আর প্রতিমন্ত্রীর পদে থাকছেন না।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিন দুপুরেই পদত্যাগপত্রটি জমা দিয়েছিলেন মুরাদ হাসান। সেটি গৃহীত হওয়ায় রাতেই তিনি সাবেক প্রতিমন্ত্রীতে পরিণত হলেন।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়া সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটিতে সই করেছেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। এ পদত্যাগ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন-
- মুরাদের পদত্যাগপত্রেও বড় ভুল
- প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে মুরাদের পদত্যাগ
- ফেসবুক স্ট্যাটাসে ক্ষমা চাইলেন ডা. মুরাদ
- মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য এবং চিত্রনায়ক ইমন ও চিত্রনায়িকা মাহির সঙ্গে একটি ফোনালাপ ফাঁসের সূত্র ধরে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ডা. মুরাদ হাসান।
জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদের মন্তব্যকে অভব্য, শিষ্টাচার বহির্ভূত, নারীবিদ্বেষী, কুরুচিপূর্ণ বলে অভিহিত করেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও। অন্যদিকে ইমন ও মাহির সঙ্গে ফোনালাপে মাহিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে তাকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়াসহ যৌন সহিংস কথাবার্তাও বলতে শোনা যায় ডা. মুরাদকে।
এরপর ডা. মুরাদের আরও কিছু অডিও-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসব অডিও-ভিডিওতে তাকে অশ্লীল কথাবার্তা বলতে এবং অসংলগ্ন আচরণ করতে দেখা যায়। নারী অধিকারকর্মীসহ রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রীর প্রতি। এসব বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগও চাওয়া হয়।
বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। সোমবার রাত ৮টায় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ ডা. মুরাদকে অবহিত করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিজ দফতরে পদত্যাগপত্র জমা দেন ডা. মুরাদ। বিকেল ৩টার দিকে তার পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পৌঁছে দেওয়া হয়। রাত ১১টার দিকে পদত্যাগপত্রটি রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন বলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে।
এদিকে, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদেও ছিলেন জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান। মঙ্গলবার বিকেলে জেলা কমিটির এক জরুরি বৈঠক থেকে তাকে সেই পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে মুরাদ হাসানকে দল থেকেও স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর