ভবঘুরে হলে কোরআন শরিফ চিনল কীভাবে— প্রশ্ন রানা দাশগুপ্তের
২১ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৩৭ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৪৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখার ঘটনায় শনাক্ত যুবক ইকবাল হোসেনকে ‘ভবঘুরে’ বলা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। তার প্রশ্ন— ভবঘুরে হলে ইকবাল কীভাবে পবিত্র কোরআন শরিফ চিনলেন?
চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে রানা দাশগুপ্তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসায় যান শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। উভয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা একান্তে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে রানা দাশগুপ্ত এ প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, ‘কুমিল্লার ঘটনায় ইকবাল হোসেন নামে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, টেলিভিশনে দেখলাম তার নামের আগে একটি শব্দ জুড়ে দেওয়া হয়েছে।। শব্দটি হলো ভবঘুরে। কখনো কখনো এমন যাদের ধরা হয়, কখনো বলে পাগল, না হলে বলে ভবঘুরে।’
‘আমার প্রশ্ন— এই ভবঘুরে কী করে পবিত্র কোরআন শরিফ চিনল? যদি সে ভবঘুরে হয়ে থাকে, যদি সে রাস্তার লোক হয়, তাহলে নতুন বই কোথা থেকে আনল, কে দিলো? ভিডিওতে দেখা গেছে— হনুমানের গদাটা এমনভাবে সরালো যেন হাতের কিছু না হয়। আবার সেখানে পবিত্র কোরআন শরিফ দিয়ে দিলো— এটি কোনো ভবঘুরের কাজ হতে পারে না।’
রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। চক্রান্তকারীরা পেছনে আছে। তাদের বের করে আনার দায়িত্ব রাষ্ট্র, প্রশাসন ও সরকারকে নিতে হবে।’
হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা চলাকালে গত ১৩ অক্টোবর অষ্টমীর দিন কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির পাড়ের দর্পণ সংঘের অস্থায়ী পূজা মণ্ডপে প্রদর্শনের জন্য রাখা একটি হনুমানের মূর্তির কোলে একটি কোরআন শরিফ পাওয়া যায়। ওই সময় হনুমানের মূর্তির হাতে থাকা গদাটি পাওয়া যায়নি। ওই দিন সকালে ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে উত্তেজনা ছড়িয়ে ওই মণ্ডপে ভাঙচুর চালানো হয়। এরপর টানা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, গাজীপুর, রংপুর, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মঠ-মন্দির, বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় চার জন নিহত ও প্রায় অর্ধশত আহত হয়েছেন।
এর মধ্যে বুধবার (২০ অক্টোবর) পূজা মণ্ডপে এক ব্যক্তির কোরআন শরিফ রেখে আসার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তার নাম ইকবাল হোসেন। ৩৫ বছর বয়সী ইকবাল কুমিল্লা শহরের সুজানগরের খানকা মাজার এলাকার নূর মোহাম্মদ আলমের ছেলে। তিনি পেশায় রঙমিস্ত্রি।
কয়েকটি গণমাধ্যমে পরিবারের বরাত দিয়ে ইকবাল হোসেনকে ভবঘুরে হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাল্টাপাল্টি আলোচনা চলছে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর