Friday 19 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশে এক-এগারোর সেই দিন আর আসবে না: কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৬ জুলাই ২০২১ ১৪:৫১ | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২১ ১৫:১৫

ফাইল ছবি

ঢাকা: এক-এগারোর কুশীলবরা এখনো বাংলাদেশে সক্রিয় আছে বলে দলের নেতাকর্মীদের সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদ। একইসঙ্গে তিনি ষড়যন্ত্রকারীদেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বলেছেন, ওয়ান-ইলেভেনের সেই দিন আর ফিরে আসবে না। কেউ কেউ এখনো এক-এগারোর রঙিন খোয়াব দেখছেন। কিন্তু সেই রঙিন খোয়াব বাংলাদেশে আর কোনোদিনও সফল হবে না। তাদের স্বপ্ন রূপান্তরিত হবে দুঃস্বপ্নে।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে নিজের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন ওবায়দুল কাদের।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ প্রান্তে সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী। বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ অন্যরা। সভা পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

অনুষ্ঠানে এক-এগারোর প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু বর্ণচোরা রাজনীতিবিদ এবং উচ্চাভিলাষী সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের ষড়যন্ত্রে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই এ দেশের গণমানুষের আস্থার সোনালি দিগন্ত জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কারাবন্দি করা হয়। এর মাধ্যমে এ দেশের গণতন্ত্রকে বন্দি করার এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এ দেশের ইতিহাসে ওয়ান-ইলেভেন একটি নিষ্ঠুর খোয়াব। এই খোয়াব তৈরি হয়েছিল বিএনপির হঠকারী ক্ষমতার রাজনীতির পথ ধরে।

তিনি বলেন, নিজেদের মানুষ হিসাবে পরিচিত কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বানানোর জন্য বিচারপতির বয়স বাড়ানো হয়েছিল। তাদের দলেরই লোক বিচারপতি আজিজকে দিয়ে একটি প্রহসনের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয় বিএনপি জোট সরকার। এক কোটি ২৫ লাখের বেশি লোক ভুয়া ভোটার নিবন্ধন করে। ইয়াজউদ্দিন সাহেবকে একাধারে রাষ্ট্রপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করে বিএনপি একতরফা নির্বাচনের নীলনকশা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এক-এগারোর প্রেক্ষাপট তৈরি করে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এরপর আসে এক-এগারো। দেশের রাজনীতিবিদদের ওপর নেমে আসে অমানিষার ঘোর অন্ধকার। দেশ পরিচালনায় দায়িত্ব যায় অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের হাতে। শেখ হাসিনাকে কারাবন্দি করার এই দিবসটি প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রের কারাবন্দি দিবস। আর নেত্রীর কারামুক্তি দিবসটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে গণতন্ত্রের কারামুক্তি দিবস হিসাবেই পরিচিতি লাভ করেছে।

এক-এগারোর সময় কারা নির্যাতিত নেতা ওবায়দুল কাদের বলেন, ওয়ান-ইলেভেন থেকে আমাদের অনেক কিছুই শেখার আছে। ওয়ান-ইলেভেন আমাদের রাজনীতিবিদদের জন্য পাঠশালার মতোই। সেখান থেকে রাজনৈতিক কর্মীদের শেখার অনেক কিছু আছে। বুঝতে হবে রাজনীতি মানে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো নয়। জনগণের জন্য নির্মোহ রাজনীতি করলে জনগণই পুরস্কৃত করে। তার উজ্জ্বল উদাহরণ ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে জনগণের আকাশচুম্বী সমর্থন। আর যারা দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত ছিল, রাষ্ট্রের সম্পদ লুণ্ঠনে ব্যস্ত ছিল, হাওয়া ভবনে ছিল— জনগণ তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছিল। তার দায় এখনো সেই দলটি বয়ে বেড়াচ্ছে।

ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা এখনো সক্রিয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা এখনো বাংলাদেশে আছে। তারা এখনো দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে আবারও ওয়ান-ইলেভেন পাঁয়তারা করছে। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশে ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৮ সালের ওইসব দিনের কথা ভুলে যান। আমরা ভুলে যাইনি কী অপমানজনকভাবে আমাদের নেত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার ঘরে তন্ন তন্ন করে সেদিন তল্লাশি চালিয়েছিল। তার অসুস্থ স্বামী ড. ওয়াজেদকে পর্যন্ত তারা অপমান করেছিল। নেত্রীকে টানাহেঁচড়া করে আদালতে নিয়ে হাজির করেছিল। সে দৃশ্য বাংলার মানুষ দেখেছে।

‘তাই স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সেইদিন আর আসবে না। যারা মনে মনে ওয়ান-ইলেভেনের রঙিন খোয়াব দেখছেন, সেই রঙিন খোয়াব বাংলাদেশে আর কোনোদিন সফল হবে না। আপনাদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে রূপান্তরিত হবে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র যারা করছে, তাদের সেই খোয়াব দেশের জনগণ সফল হতে দেবে না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শেকড় আমাদের মাটির অনেক গভীরে। কোনো ষড়যন্ত্রেই আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের দেশের জনগণ থেকে দূরে সরাতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না,’— বলেন ওবায়দুল কাদের।

করোনা মহামারির সংকটে সবাইকে সচেতনতার প্রাচীর গড়ে তুলে শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে অসহায় জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর