মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের ঘটনায় মামলা, ৩ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ

ঝালকাঠি: জেলার নলছিটিতে আ. সত্তার জোমাদ্দার এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় দায়ের পর তিনদিনেও কোনো আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামিদের হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা ঘর থেকে বের হতে পারছে না অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এর আগে, গত ২৭ এপ্রিল বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্তার জোমাদ্দার বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে নলছিটি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন— উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের মৃত আলী আজীম খানের ছেলে মো. ফারুক আহম্মেদ, হেমায়েত উদ্দিন খানের ছেলে বর্তমান ইউপি সদস্য (মেম্বার) রেজাউল করিম সোহাগ, মো. ফারুক আহম্মেদের ছেলে আতিকুর রহমান, মৃত আ. রহিম খানের ছেলে মো. হেমায়েত উদ্দিন খান, ফরিদ উদ্দিন খান ছেলে মো. আসিফ খান, মৃত সুলতান খানের ছেলে মো. গোলাম মোস্তফাসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন।

মামলা বিবরণ থেকে জানা গেছে, উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্তার জোমাদ্দারের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (রনি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী হওয়ায় অপর মেম্বার প্রার্থী (বর্তমান মেম্বার) রেজাউল করিম সোহাগসহ অন্যান্য আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়। গত ২৩ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে স্থানীয় নলবুনিয়া বাজার থেকে ফেরার পথে আসামিরা লোহার রড, লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পথরোধ করে। এ সময় তার ছেলে রনিকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিতে বলেন এবং মুক্তিযোদ্ধাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দিতে থাকে আসামিরা। তিনি এর প্রতিবাদ করলে আসামিরা তাকে মারধর শুরু করে। আসামি ফারুক খান, সোহাগ খান ও আতিকুর রহমান লোহার রড দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। মারধরের একপর্যায় মুক্তিযোদ্ধা সত্তার রাস্তার ওপর পড়ে গেলে মেম্বার রেজাউল করিম সোহাগ তার পাঞ্জাবির পকেটে থাকা ৬৫০ টাকা নিয়ে যায়। এ সময় আহত মুক্তিযোদ্ধার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে আসলে আসামিরা তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের খুন-জখমের হুমকি দিয়ে সটকে পড়েন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্তার জোমাদ্দার বলেন, আসামিরা মামলা দায়ের পর বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্থানীয় নলবুনিয়া বাজারে মহড়া দিচ্ছে। আমার ছেলে নির্বাচনী কর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘মামলার ২ নম্বর আসামি রেজাউল করিম সোহাগ প্রতিনিয়ত আমার ছেলেকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে হুমকি দিচ্ছেন। আমার পরিবারের সদস্যরা সোহাগের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। এই বৃদ্ধ বয়সে এসে এমন ঘটনা ঘটবে, তা কল্পনাও করিনি।’

তবে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলি আহম্মেদ বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড বিতরণে অনিয়ম পাওয়ায় মেম্বার রেজাউল করিম সোহাগ খানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার।

সারাবাংলা/এনএস

গ্রেফতার হয়নি কেউ ঝালকাঠি বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর মামলা