Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বনের মধ্যে গড়ে উঠছে করাত কল, ‘ঠেকানো’র নেই কেউ

মনিরুল ইসলাম, লোকাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ এপ্রিল ২০২১ ০৮:৪৪ | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২১ ০৮:৫১

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী): সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বনের মধ্যে করাত কল স্থাপনের কাজ চললেও, প্রশাসনের কেউই যেন তা দেখছে না! পরিবেশ ও বন বিভাগের ছাড়পত্র ও বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে উঠছে করাত কলটি। তবে করাত কলের মালিক বিধান চন্দ্র হাওলাদার বলছেন, রেকর্ডীয় জমিতেই করাত কল তৈরি হচ্ছে। যদিও এর স্বপক্ষে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেন নি।

পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের তুলাতলী এলাকায় করাত কলটি স্থাপন করা হচ্ছে। করাত কলের দক্ষিণ পার্শ্বে ৪৮নং পোল্ডারের পাউবো বেড়িবাঁধের সরকারি জমি আর উত্তর পার্শ্বে খাপড়াভাঙ্গা নদী, মাঝখানে বনবিভাগের বাগান। মিলের পাশে রয়েছে কেওড়া, গোলপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাটির নিচে গোলগাছ চাপা দিয়ে করাত কলের ট্রলি বসানো হয়েছে। কলের স্থাপনের পূর্ব পরিকল্পনা হিসেবে আগেভাগেই দু’টি ‘কুটাকুড়’ও বসানো হয়েছে। আর চলমান লকডাউনের সুযোগে স্থাপন করা হচ্ছে করাত কলটি।

যদিও করাত কল স্থাপনের জন্য বন বিভাগের লাইসেন্স প্রাপ্তির পর নিতে হয় পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। করাত কল লাইসেন্স বিধিমালা ২০১২-র আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা রয়েছে, করাত কল স্থাপন বা পরিচালনার জন্য লাইসেন্স ফি বাবদ ২০০০ টাকা ‘১/৪৫৩১/০০০০/২৬৮১ (বিবিধ রাজস্ব ও প্রাপ্তি)’ খাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বা যেকোনো সরকারি ট্রেজারিতে জমা দিয়ে তার ট্রেজারি চালান আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত না করলে আবেদনপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।

এছাড়া সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে করাত কল স্থাপন করা যাবে না।

বিজ্ঞাপন

বিধিমালায় আরও বলা আছে, এ আইন কার্যকর হওয়ার আগে কোনো নিষিদ্ধ স্থানে করাত কল স্থাপন করা হয়ে থাকলে আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। যদি তা না করা হয় তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তা বন্ধের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

তবে এতসব আইন থাকলেও বনের পাশে এই করাতকল নির্মাণের কাজ কেউই ঠেকাতে পারছে না। করাত কল মালিক বিধান চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘আশেপাশে সরকারি জমি থাকলেও মিলটি রেকর্ডীয় জমিতে বসানো হয়েছে। আমি বন বিভাগের একটি গাছও নষ্ট করিনি’।

মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘করাত কল স্থাপনের বিষয়টি আমার জানা নেই। চলমান লকডাউনের সুযোগ নিয়ে মিলটি স্থাপন করা হচ্ছে। আমি খোঁজখবর নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো’।

তবে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

সারাবাংলা/এমও

করাত কল পটুয়াখালী বন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর