করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী উৎপাদনে বিনিয়োগ সহায়তা পাবেন উদ্যোক্তারা
১৮ এপ্রিল ২০২১ ১৯:২৯
ঢাকা: বৈশ্বিক করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে করোনা প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও চিকিৎসা সামগ্রীর চাহিদা ও সরবরাহের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সামনে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছে সরকার। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জব (ইসিফোরজে) প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ সহায়তা দেওয়া হবে।
রোববার (১৮ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়ান টিমবন ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেন, ‘কেবল স্থানীয় বাজারের জন্য নয়, বৈদেশিক বাজারে রফতানির সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারাও এ কর্মসূচির মাধ্যমে উপকৃত হবেন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এ কর্মসূচি একটি মাইলস্টোন। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) উৎপাদন, ডায়াগনস্টিক ইক্যুইপমেন্ট ও ক্লিনিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট তৈরিতে যুক্ত উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ সহায়তা পাবেন।’
সালমান ফজলুর রহমান বলেন, ‘সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ রফতানির বৈচিত্র্য বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান তৈরি করা, যা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। কোভিড-১৯ এন্টারপ্রাইজ রেসপন্ড ফান্ডের (সিইআরএফ) মাধ্যমে এ ধরণের উদ্যোগ স্থানীয় ও বিশ্বাবাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে উপকৃত হবে।’
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়ন টিমবন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘এতে বিশ্বব্যাংকও এগিয়ে এসেছে। করোনা প্রতিরোধসামগ্রীর উৎপাদনে নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০টির মত আবেদন এই কর্মসূচির সুবিধা পাবে।’
ড. মো. জাফর উদ্দিন বলেন, “স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর আমাদের ৫ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলারের রফতানি ক্ষতি হতে পারে।তবে এতে আমরা ভীত নই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবো।আমাদের মূল কাজ পণ্য ও বাজার বহুমূখীকরণ করা। ইসিফোরজে প্রকল্পের মাধ্যমে তা সহজ হবে। নতুন এ কর্মসূচিতে যোগ্য আবেদনকারীদের মধ্যে ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে সহযোগিতা দেওয়া হবে।”
এসময় নতুন কর্মসূচীর (উইন্ডো ফোর) বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রকল্পের এক্সপোর্ট রেডিনেস ফান্ড (ইআরএফ) কর্মসূচির টিম লিডার ডেভ রাঙ্গানাইকালু। এতে বলা হয়, কর্মসূচির জন্য বিনিয়োগ সহায়তা পরিমাণ হবে ৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতিটি উদ্যোগে বিনিয়োগ সহায়তা পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ ৫ লাখ মার্কিন ডলার এবং সর্বনিম্ন ৫০ হাজার ডলার। প্রস্তাবিত এ কার্যক্রম ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান থাকবে। ১৮ এপ্রিল থেকেই এ কর্মসূচির যোগ্য আবেদনকারীরা বিনিয়োগ সহায়তা জন্য আবেদন করতে পারছেন।’
যেসব পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে এ বিনিয়োগ সহায়তা প্রযোজ্য হবে তা হলো- পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই), ডায়াগনোস্টিক ইকুইপমেন্ট, ক্লিনিক্যাল কেয়ার ইকুইপমেন্ট। এমপিপিই পণ্যের ডিজাইন ও কারিগরি মানের উন্নয়ন, প্যাকেজিং ও বৈচিত্র্য আনয়ন এবং ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন প্রণয়ন, এমপিপিই পণ্যের সহায়তামূলক কর্মকাণ্ড যেমন, গবেষণা, পণ্য উন্নয়ন, টেস্টিং ও সার্টিফিকেশন এবং নতুন উদ্ভাবন।
সারাবাংলা/জিএস/এমও