Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বিএনপি সবচেয়ে বড় স্বাধীনতাবিরোধী’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ জানুয়ারি ২০২১ ২১:১২ | আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ২১:৪০

ঢাকা: সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবে বিএনপিকে ‘সবচেয়ে বড় স্বাধীনতাবিরোধী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা।

বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি হচ্ছে জিয়াউর রহমান। আর তার হাতে তৈরি দল বিএনপি সবচেয়ে বড় স্বাধীনতাবিরোধী। যারা বঙ্গবন্ধুর খুনি, যুদ্ধাপরাধী, একাত্তরের গণহত্যাকারীদের সঙ্গে দল করে, জোট করে, মন্ত্রী বানিয়ে রক্তাক্ত জাতীয় পতাকা তুলে দেয়— তারা কখনোই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হতে পারে না। বিএনপির উচিত জাতির কাছে ক্ষমতা চেয়ে সুস্থ রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসা।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ‘করোনাকালীন ব্যর্থতা সরকারের সব ব্যর্থতাকে ছাড়িয়ে গেছে’

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সংসদে আলোচনায় বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতা আগের সব ব্যর্থতাকে ছাড়িয়ে গেছে। বিএনপিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই মিথ্যা হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনকে দেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না, দলের মহাসচিবকে দফায় দফায় জেলে পাঠানো হয়েছে। এসময় এসময় রুমিন ফারহানা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে ‘স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি’ বলে অভিহিত করেন।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির এই সংসদ সদস্যদের এসব অভিযোগের কড়া জবাব দেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি হচ্ছে জেনারেল জিয়াউর রহমান। স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি কে? সেটি তো আপনারাই (বিএনপি)। যারা বঙ্গবন্ধুর খুনি, স্বাধীনতাবিরাধী, একাত্তরের গণহত্যাকারীদের নিয়ে জোট করে, মন্ত্রী করে তাদের গাড়িতে পতাকা তুলে দেয়— তারা কি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি?

ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, তারা (বিএনপির এমপি) আইএমএফসহ কিছু সংস্থার ডাটা দেন এবং বিভিন্ন সংগঠনের কথা বলেন। এসব ভুঁইফোড় সংগঠন যেমন বাংলাদেশে আছে, তেমনি সারা পৃথিবীতে আছে। এদের ফান্ড করলে তারা যেকোনো রিপোর্ট আপনাকে তৈরি করে দেবে।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, সুযোগ পেলেই তারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। নির্বাচন করেন না, কিন্তু সংসদে ঠিকই এসে বসেন, নির্বাচনের বিরুদ্ধে কথা বলেন। এতই যদি নির্বাচন খারাপ হয়ে থাকে, তবে এমপি হিসেবে কেন সুযোগ-সুবিধাগুলো নিচ্ছেন? কেন ১০ কাঠা জমির আবেদন করেছিলেন? জিয়াউর রহমানের হ্যাঁ-না ভোটের নির্বাচন? ১১০ ভাগ হ্যাঁ ভোট, না ভোট একটিও পড়েনি। ওই নির্বাচন আপনারা চান? এমন নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ হতে দেবে না।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম বলেন, যাদের (বিএনপি) কিছু ভাল লাগে না, তারা বলেন সরকার ভ্যাকসিন আনতে পারবে না। এখন ভ্যাকসিন আসার পর বলছে, এগুলো কি ভালো? আসলে সরকারের কোনো ভালো কাজই তাদের চোখে পড়ে না। এমন নজির বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তৈরি করেছেন, কেউ কোনদিন দেখেনি, বিশ্বের কেউ করতে পারেনি। ভূমিহীন-গৃহহীনদের ৭০ হাজার পাকা ঘর করে দিয়েছেন। আরও এক লাখ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

সরকারি দলের সাইমুন সরওয়ার কমল বলেন, মিথ্যা কথা বলতে বলতে বিএনপি এখন করোনা রোগী হয়ে গেছে। তাই বিএনপি নেতাদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। বিএনপি বিশ্বের সেরা মিথ্যাবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। তার প্রমাণ একাত্তরের পরাজিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমরান খান নিজেই বলেছেন, ইউরোপ-আমেরিকা থেকে নয়, উন্নয়ন করতে হলে বাংলাদেশ থেকে শিখতে হবে।

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের প্রস্তাব রেখে বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটসহ অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্র থেমে নেই। তারা সুযোগ পেলেই ছোবল দিতে পারে। তাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবেই সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু কখনও শুনি না ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রের কথা। কিভাবে তাহলে চার মূলনীতি বাস্তবায়ন হবে, বুঝি না। দেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে, অনেক দূর এগিয়েছে। তবে ক্ষমতা এককেন্দ্রিক হওয়ায় ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট বেড়েছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় বলেন, করোনায় মানব সভ্যতা গভীর সংকটে। এ সময়ে দেশের মানুষের একমাত্র আশার বাতিঘরই হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একসঙ্গে ৭০ হাজার পরিবারকে বিনামূল্য জমিসহ বাড়ি নির্মাণ করে দিয়ে বিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এটাও প্রধানমন্ত্রীর কালজয়ী মানবতার আরেক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

আলোচনায় আরো অংশ নেন সরকারি দলের মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী, আহসানুল হক টিটু, বেগম হোসনে আরা ও বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পনির উদ্দিন আহমেদ।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

টপ নিউজ বিএনপি রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা সরকারি দলের সংসদ সদস্য সংসদ অধিবেশন স্বাধীনতাবিরোধী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর