চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনায় আক্রান্ত এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা আগে ওই নারীর স্বামী মারা যান হৃদরোগে। এছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আরও দু’জন।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে শনিবার (১৬ মে) রাত ৮টার দিকে মারা যান নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা আশরাফ আলী রোডের ৫৭ বছর বয়সী নারী।
তার ছেলে সারাবাংলাকে জানান, তার মা জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ প্রতিবেদন আসার পর গত ১১ মে তাকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৫ মে তার বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ৮টার দিকে তিনি মারা যান। নমুনা পরীক্ষায় তারা বাবার রিপোর্ট নিগেটিভ আসে। এরপর ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তার মাও পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।
তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায়। মৃত্যুর পর গ্রামের বাড়িতে নেওয়ার চেষ্টা করেও নানামুখী বাধার কারণে নিতে পারেননি বলে অভিযোগ ছেলের। তিনি জানান, গ্রামে নিতে না পেরে সৎকারের জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারীর দ্বারস্থ হন তিনি। কাউন্সিলরের নেতৃত্বে একদল স্বেচ্ছাসেবক চান্দগাঁও বৌদ্ধ মহাশ্মশানে তার মায়ের দাহ সম্পন্ন করেছেন।
কাউন্সিলর জহরলাল হাজারি সারাবাংলাকে বলেন, ‘হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তাদের সৎকারের জন্য আমরা একটা টিম করেছি। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে আমরা তাদের দাহ করছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। আমরা করোনা আক্রান্ত স্ত্রীর লাশ পরিবহন এবং দাহকাজ করেছি। এখন পর্যন্ত আমরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় পাঁচজনের সৎকার করেছি।’
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব সারাবাংলাকে জানান, শনিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত নারী মারা যান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফটিকছড়ি উপজেলার এক ৭০ বয়সী বৃদ্ধ মারা যান। রোববার সকাল ৮টার দিকে নগরীর আগ্রাবাদ বেপারী পাড়ার ৫৯ বয়সী এক পুরুষ মারা যান জেনারেল হাসপাতালে। এই দুইজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
রোববার পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে ১১৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে সাতজন রোগী আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।