কুয়েত থেকে দেশে ফিরছে ২ হাজার শ্রমিক, প্রক্রিয়া শুরু
১১ মে ২০২০ ১৬:৪৭ | আপডেট: ১১ মে ২০২০ ১৮:২৪
ঢাকা: কুয়েতে সাধারণ ক্ষমা পাওয়া দুই হাজার অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিককে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সোমবার (১১) শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের দেশে ফেরাতে এরই মধ্যে ৬টি ফ্লাইট প্রস্তুত করা হয়েছে বলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা জানান, প্রথম দফায় দুই হাজারের মতো বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে ফিরতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে অন্যান্যদেরও আনা হবে। যারা দেশে ফিরবেন তাদের প্রত্যেককে ১৪ দিন কোয়ারেনটাইনে রাখা হবে। এমনকি তাদের ফ্লাইটে ওঠানোর আগেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। আবার ঢাকায় পৌঁছানোর পরেও তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। বিদেশ থেকে আসা সকল শ্রমিকদের জন্যই এই ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
জানা যায়, এপ্রিল মাসে বিভিন্নভাবে অবৈধ হয়ে পড়া অভিবাসীদের কুয়েত ছাড়ার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে দেশটির সরকার। ফলে অবৈধ অভিবাসীরা জরিমানা ছাড়াই কুয়েত ছাড়তে পারবেন। পাশাপাশি কুয়েত সরকারের খরচে আকামা ছাড়াই প্রবাসীদের নিজ নিজ দেশে পাঠানো হবে।
কুয়েত সরকারের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কুয়েত ছাড়তে অবৈধদের আহ্বান জানায় কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাস। অবৈধদের অবগতির জন্য দূতাবাসের ফেসবুক পেইজে ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ দেওয়া হয়। আগ্রহীদের এপ্রিলের ১২ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ কুয়েত সরকারের নির্দিষ্ট অফিসে নাম নিবন্ধনের জন্য যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় পাঁচ হাজার বাংলাদেশি নাম নিবন্ধন করেন।
রাজধানী কুয়েত সিটির বাইরে আব্দালীয়া, সেবদি, মাঙ্গাফ ও কসর নামের এই চার ক্যাম্পে বাংলাদেশিদের রাখা হয়েছে। সেখানে এতদিন মানবেতর জীবন যাপনের অভিযোগ করেছেন তারা। তাদের কষ্টের কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করেছে অনেকে। ক্যাম্পে অসুস্থ হয়ে দুই শ্রমিক মারাও গেছেন।
সূত্র জানায়, মৃত ওই দুই শ্রমিকের মরদেহও একই প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের ফ্লাইটে পাঠানো হবে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সেখানে মারা যাওয়া আরও ত্রিশ জনের মরদেহ সংরক্ষিত রয়েছে। সেসব মরদেহও এবার পাঠানোর ব্যবস্থা করবে দূতাবাস।
জানা গেছে, কুয়েতে প্রায় ১৫ থেকে ১৭ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী রয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালের সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়েছিলেন ৮ হাজার বাংলাদেশি। এবার ২০২০ সালে প্রায় পাঁচ হাজার সাধারণ ক্ষমা পেল। এদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কুয়েত সরকারের পক্ষ থেকে চাপও ছিল।