‘মাছ ধরার চেয়ে নারীদের খুন করা সহজ সিরিয়াল কিলার বাবুর কাছে’
২০ অক্টোবর ২০১৯ ১৮:৫৪ | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ২২:৪২
নাটোর: ‘মাছ ধরার চেয়েও নারীদের হত্যা করা অনেক সহজ ছিল তার কাছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের নারীদের টার্গেট করে হত্যা করতো সে।’ রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে নাটোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এক সিরিয়াল কিলারের বিষয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য দেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম হাফিজ আক্তার।
ওই সিরিয়াল কিলার হলো বাবু শেখ। সে নওগাঁ জেলার রাণীনগর থানার মৃত জাহের আলীর ছেলে। এলাকাতে চুরির দায়ে এলাকাবাসী তাকে গ্রাম ছাড়া করেছিল। নাটোরের ৮টি হত্যা মামলার ঘটনায় তার চার সহযোগীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, ৮ নারীকে হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বাবু শেখ এবং তার সহযোগীরা। হত্যাকাণ্ডের পর লুট করা স্বর্ণালংকার এবং মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন আলামত বাবু শেখের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুসারে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ৯ অক্টোবর নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জয়ন্তীপুর এলাকার রেহেনা বেগম (৬০) ও লালপুর উপজেলায় চংধুপইল এলাকার আনসার সদস্য সাবিনা পারভীন সাহেরাকে হত্যা করা হয়। এ দু’টি ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এরই একপর্যায়ে গত ১৫ অক্টোবর পুলিশ সিংড়া থেকে রুবেল আলীকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যে একই দিন লালপুর উপজেলায় চংধুপইল থেকে লুট করা স্বর্ণালংকার ক্রেতা স্বর্ণ ব্যবসায়ী লিটন খাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
এই দুইজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ অক্টোবর নাটোর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আসাদুলকে গ্রেফতার করা হয়। আসাদুল জানায় চুরি করার সময় তার সঙ্গে রুবেল আলী ও বাবু শেখ ছিল। এর পরে ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় একই স্থান থেকে বাবু শেখকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে বাবু শেখ স্বীকার করে যে, সে নাটোরের লালপুর, বাগাতিপাড়া, বাঁশিলা, নলডাঙ্গা, টাঙ্গাইল ও নওগাঁ জেলায় ৮ জন নারীকে হত্যা করেছে। তারা জেলের বেশে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায় ও চুরির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সহযোগিদের সাহায্যে সুবিধাজনক বাড়িতে প্রবেশ করে নারীদের ধর্ষণ শেষে হত্যা ও টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে তারা।
প্রেস ব্রিফিংকালে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বড়াইগ্রাম সার্কেল হারুন-অর রশিদ, ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈকত হাসান উপস্থিত ছিলেন।
তবে ৮টি হত্যাকাণ্ডসহ আরও বিভিন্ন অনেক অপরাধের সঙ্গে বাবু শেখের জড়িত থাকার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি পুলিশ সুপারের।