Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুলিশে চাকরি আর বিয়ের প্রলোভন: পোশাক কর্মীকে তিনদিন আটকে ধর্ষণ


৯ জুলাই ২০১৯ ১৬:৫৪ | আপডেট: ৯ জুলাই ২০১৯ ১৯:১৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে তিনদিন ধরে হোটেলে আটকে রেখে এক পোশাক কর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়া এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (৯ জুলাই) রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানার ঝর্ণাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে জড়িত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হল- শাহাদাৎ হোসেন রাজু (৩০) ও মহব্বত আলী (২৫)।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার শিকার তরুণীর বাড়ি রাঙামাটি জেলায়। বয়স আনুমানিক ২০ বছর। তিনি নগরীর কর্ণফুলী ইপিজেডে এম এইচ গার্মেন্টস নামে একটি কারখানায় কাজ করেন বলে জানিয়েছেন নগরীর ডবলমুরিং জোনের সহকারি কমিশনার (এসি) আশিকুর রহমান।

ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন সারাবাংলাকে জানান, আক্রান্ত তরুণীর এক পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। পরে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। আনুমানিক দুই মাস আগে তরুণীর সঙ্গে শাহাদাতের পরিচয় হয়। তারা একসঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে যায়। শাহাদাত তরুণীকে জানায়, তার সঙ্গে পুলিশের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদের পরিচয় আছে। তরুণীকে সে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাইয়ে দেবে। এতে তাকে আর পোশাক কারখানায় চাকরি করতে হবে না। তার লাইফস্টাইল পাল্টে যাবে।

‘জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে শাহাদাত তরুণীকে নিয়ে নগরীর জেল রোডে আমানত শাহ’র মাজারে যায়। সেখানে শাহাদাত কান্নাজড়িত কন্ঠে তাকে জানায়, তার স্ত্রী মারা গেছে। মা-হারা দুই সন্তান নিয়ে সে খুব কষ্টে আছে। এজন্য শাহাদাতকে বিয়ে করার জন্য তরুণীকে অনুরোধ করে। শাহাদাতের কান্না দেখে তরুণী রাজি হয়। গত ৪ জুলাই শাহাদাত তরুণীকে নিয়ে নগরীর চৌমুহনী এলাকায় হক টাওয়ার নামে একটি হোটেলের ৪০৬ নম্বর কক্ষে ওঠে। সেখানে ৭ জুলাই পর্যন্ত আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করে শাহাদাত।’

বিজ্ঞাপন

জহির আরও জানান, ৭ জুলাই তরুণী শাহাদাতকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। তখন শাহাদাত হোটেলে মহব্বতকে ডেকে আনে এবং তরুণীকে তার বাসায় নিয়ে যেতে বলে। সেখানে তরুণীকে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। মহব্বত নগরীর ডবলমুরিং থানার মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় একটি বাসায় তরুণীকে নিয়ে যায়। সেখানে তরুণীকে একাধিকবার সে যৌন হয়রানি করে। তরুণী ৭ জুলাই রাতে কৌশলে ওই বাসা থেকে পালিয়ে নগরীর চকবাজারে নিজের বাসায় যান।

৮ জুলাই (সোমবার) সকালে তরুণী মহব্বতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার ফেলে আসা পোশাক ফেরত দিতে বলেন। মহব্বত তাকে ডবলমুরিং থানার ঝর্ণাপাড়া এলাকায় যেতে বলে। সোমবার সন্ধ্যার পর তরুণী গেলে তাকে নিয়ে ঝর্ণাপাড়ায় নাহার বিল্ডিংয়ের নিচতলায় একটি বাসায় ওঠে। স্থানীয় লোকজন তাদের পরিচয় জানতে চাইলে মহব্বত তরুণীকে তার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে নতুন বাসা ভাড়া নিয়েছে বলে জানায়। তরুণীকে বাসায় রেখে মহব্বত বাইরে যায়।

এই ফাঁকে মেয়েটি পুরো বিষয় বাসার আশপাশের লোকজনকে জানায়। তখন স্থানীয়রা ডবলমুরিং থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। ঝর্ণাপাড়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে মহব্বতকেও আটক করে। রাতে মহব্বতের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শাহাদাতকেও একই এলাকা থেকে আটক করা হয়।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ সারাবাংলাকে জানান, আক্রান্ত তরুণীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তরুণী বাদি হয়ে আটক দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দু’জনকে বুধবার আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

সারাবাংলা/আরডি/জেএএম

চট্টমেট্রো টপ নিউজ ধর্ষণ পোশাক কর্মী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর