বিদায়ী অর্থবছরে রেমিট্যান্সে রেকর্ড
২ জুলাই ২০১৯ ১৭:১৬ | আপডেট: ২ জুলাই ২০১৯ ২০:১৭
ঢাকা: সদ্য বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের (জুলাই-১৮-জুন-১৯) পর্যন্ত সময়ে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১ হাজার ৬৩১ কোটি মার্কিন ডলার। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল। এবার রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রে আগের রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৪শ’ ৯৮ কোটি মর্কিন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বিদায়ী অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ১৬ দশমিক ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে এই রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বিশেষ করে হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে নেওয়া নানা উদ্যোগের সুফল পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিদায়ী অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। বিশেষ করে চলতি বছরের শুরু থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে শুরু করে। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারীতে রেকর্ড পরিমাণ ১৫৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এরপর গত মে মাসে প্রবাসীরা ১৭৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়ে আবার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে (জুলাই-২০১৮ থেকে জুন-২০১৯) পর্যন্ত সময়ে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৬৩১ কোটি মার্কিন ডলার। এটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে ১৩৩ কোটি ডলার বেশি। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে (জুলাই-১৭ থেকে জুন-১৮) রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৯৮ কোটি মার্কিন ডলার।
বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মাস ভিত্তিক রেমিট্যান্স: ২০১৯ সালের প্রথম থেকেই বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ ১৫৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এরপর ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, মার্চে ১৪৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার, এপ্রিলে ১৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, মে মাসে ১৭৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং চলতি বছরের জুন মাসে রেমিট্যান্স আসে ১২৭ কোটি ডলার।
অন্যদিকে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠায় ১৩১ কোটি ৭০ লাখ ডলার, আগষ্টে ১৪১ কোটি ১০ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ১১২ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১১৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, নভেম্বর ১১৮ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ১২৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্সের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য এ চিত্র উঠে আসে।
বছর ভিত্তিক রেমিট্যান্স: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পঞ্জিকা বছর হিসাবে, ২০১৮ সালে দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার, ২০১৫ সালে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।
অন্যদিকে, অর্থবছর হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৬৩১ কোটি ডলার।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১২ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর শীর্ষ ১০টি দেশ হলো যথাক্রমে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ওমান, যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।
সারাবাংলা/জিএস/জেএএম