Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শোলাকিয়ায় ঈদ সমাবেশে হার মানলো বৃষ্টি


৫ জুন ২০১৯ ১২:৩২ | আপডেট: ৫ জুন ২০১৯ ১৩:৪২

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া থেকে: আকাশের মতিগতি দেখে অনেকেই সঙ্গে ছাতা নিয়ে এসেছিলেন। আবার অনেকেই এসেছিলেন খালি হাতে। মুসল্লিরা যখন মাঠে প্রবেশ করছেন ঠিক তখনই অঝোর ধারায় নেমে এলো বৃষ্টি। মুহূর্তেই হুলোস্থুল বেঁধে গেলো গোটা ঈদগাহে! কিন্তু কোথাও আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ নেই। ফলে সবাই সিদ্ধান্ত নিলেন বৃষ্টিতে ভিজেই আদায় করবেন ঈদের নামাজ। শেষতক হলোও তাই। মুসল্লিদের অমিত দৃঢ়তার কাছে হার মানলো বৃষ্টির দাপট।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৫ জুন) সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অন্যতম বৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তবে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে ১৯২তম এ ঈদ জামাতে ইমামতি করতে দেশের বরেণ্য ইসলামি চিন্তাবীদ আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ পৌঁছতে বিলম্ব করায় সকাল ১০টার পরিবর্তে ২৫ মিনিট পর শুরু হয় দেশের বৃহৎ এ ঈদ জামাত।

এদিকে, এ ঈদ জামাতকে ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। ফলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে সকাল ৭টা থেকেই শোলাকিয়ায় আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, গাজীপুর, কুমিল্লা, বরিশাল, নরসিংদী, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা এখানে এসে জড়ো হন।

কিন্তু ভোর থেকেই মুখ ভার করে আকাশ। থেমে থেমে হয় বৃষ্টি। এমন অবস্থা চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত। ঈদের জামাত শুরুতে দেরি হওয়ার আগেই বৃষ্টির হানায় ভিজে কাক হয়ে নামাজ আদায় করতে হয় তাদের।

এদিকে, জামাতে প্রবেশের মুখে র‌্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তীক্ষ্ণ নজর ছিল। ঈদ জামাতে আসা মুসল্লিদের তল্লাশি করে তবেই ঈদগাহে প্রবেশ করতে দেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে এ নিয়ে কারও মনে কোনো ক্ষোভ দেখা যায়নি। উল্টো কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলায় দূর দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

নিরাপত্তার অংশ হিসেবে মাঠের চারপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। এখানে রেওয়াজ মোতাবেক নামাজ শুরুর ১৫ মিনিট আগে পরপর তিন বার শটগানের গুলি ছোঁড়া হয়। এর মাধ্যমে মুসল্লিদের নামাজে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

ঈদের জামাত শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ ও দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। ঈদগাহে অনেক শিশুই বাবা’র হাত ধরে ময়দানে আসে। ময়মনসিংহ থেকে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশ নিতে আসা সংবাদকর্মী আবু সালেহ সারাবাংলাকে জানান, কখনো শোলাকিয়ায় ঈদের নামাজ পড়া হয়নি। অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল এখানে ঈদ জামাতে অংশ নেওয়া। আজ সেই মনোবাসনা পূর্ণ হয়েছে। দেশ ও জাতির শান্তির জন্য আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করেছি।

নরসিংদী সদর থেকে আসা সালাহউদ্দিন (৪০) সারাবাংলাকে বলেন, প্রথমবারের মতো নামাজ আদায় করলাম। অথচ কতদিন স্বপ্ন দেখেছি শোলাকিয়ায় দেশের প্রধান ঈদ জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করব। অবশেষে আল্লাহ প্রার্থনা কবুল করেছেন। যে কারণে এত বিপুলসংখ্যক মানুষের সঙ্গে শোলাকিয়ায় নামাজ আদায় করার সৌভাগ্য হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে আসা হাফিজুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, এখানে নামাজ পড়ে দেহ-মনে প্রশান্তি অনুভব করছি। এখন থেকে নিয়ত করেছি প্রতি ঈদেই এখানে নামাজ আদায় করার।

তিনি বলেন, ক’বছর আগে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর মনে আশঙ্কা ছিল আবারও এখানে কিছু ঘটে কি না। কিন্তু পুলিশ-র‌্যাবের নিরাপত্তায় সব ভয় দূর হয়েছে। আল্লাহ শোলাকিয়ার মুসল্লিদের হেফাজত করেছেন।

সারাবাংলা/টিএস

আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ ঈদ মুবারক ঈদ মোবারক ঈদুল ফিতর শোলাকিয়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর