।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলায় ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারকাকাজ অানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
সোমাবার ( ২৬ নভেম্বর) দুপুরে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। সেই সঙ্গে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন: হলি আর্টিজান: মামলায় গ্রেফতার সংক্রান্ত প্রতিবেদন ২৯ আগস্ট
বিচার শুরু হওয়া ৮ আসামিরা হলেন, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশিদ ও শরিফুল ইসলাম।
এর আগে সংশ্লিষ্ট আদালতের প্রসিকিউটর গোলাম সারেয়ার খান জানিয়েছিলেন, গত ২৯ আগস্ট পলাতক আসামি মো. শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদের সম্পত্তি ক্রোক এবং তাদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে আদালত।
আরও পড়ুন: ৩ কারণে হলি আর্টিজানে হামলা
চলতি বছরের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মামলাটিতে সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গত মাসের ২৬ জুলাই সিএমএম আদালত মামলাটি ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন।
অন্যদিকে চার্জশিটে ৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়া চার্জশিটে অভিযুক্ত অপর ১৩ জন মৃত্যুবরণ করায় তাদের অব্যাহতি প্রদানের আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। এই মামলায় মো. মামুনুর রশিদ ও মো. শরিফুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিভীষিকাময় রাতের ২ বছর
মামলাটিতে গত ৮ আগস্ট আট আসামির বিরুদ্ধে দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণ করে আদালত। চার্জশিটে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য-প্রমান না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
বাড়িটিকে জড়িয়ে রেখেছে শূন্যতা, হাহাকার
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশান হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ৯ ইতালীয়, ৭ জাপানি, ১ ভারতীয় ও ২ বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হন। রাতভর সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর অপারেশন সার্চ লাইটের মাধ্যমে এর সমাপ্তি ঘটে। পরে সেখান থেকে পাঁচ জঙ্গির সাথে রেস্তোরার প্রধান শেফ সাইফুল ইসলামের লাশ উদ্ধার হয়। আর সাইফুলের সহকারী জাকির হোসেন শাওন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
একই ঘটনায় সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের ছোঁড়া গ্রেনেডের আঘাতে রেস্তোরাঁর বাইরে নিহত হন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল করিম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান।
হলি আর্টিজানে জাপানি দূতাবাসের শ্রদ্ধা
পাঁচ জঙ্গিসহ শেফ সাইফুল ইসলাম ও সহকারী শেফ শাওনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে দীর্ঘদিন পরে থাকার পর বেওয়ারিশ ঘোষণা করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
সারাবাংলা/এআই/জেডএফ