স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির বিএনপিপন্থী অংশ। একই সঙ্গে তারা অধস্তন আদালতের বিচারকদের আচরণ ও চাকরি শৃঙ্খলাবিধি সংশোধন করে পুনরায় আপিল বিভাগে উপস্থাপনেরও দাবি জানিয়েছে।
অপরদিকে সমিতির আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের এ দাবি আদালত অবমাননার শামিল বলে দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তন ও ল’রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।
সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমাদের অনেক দিনের দাবি বিচার বিভাগের জন্য একটি স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা। এ গেজেটে সচিবালয় প্রতিষ্ঠার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আশা করি সরকার মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে বিচার বিভাগ পরিচালনায় আইনমন্ত্রণালয়ের প্রভাবমুক্ত একটি বিচার বিভাগীয় সচিবালয় স্থাপন করে পুনরায় গেজেটটি সংশোধিত আকারে প্রকাশ করে আপিল বিভাগে উপস্থাপন করবে।’
বার সভাপতি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার উপর এবং স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের উপর নির্ভর করে সংবিধান সুরক্ষা, মানবাধিকার, সুশাসন, গণতন্ত্র এবং নাগরিকদের মৌলিক ও ভোটের অধিকার। তাই সকল মহলকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকার আহবান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহসম্পাদক শামীমা সুলতানা দীপ্তি উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে ল’ রিপোর্টর্স ফোরামের কার্যালয়ে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি অজি উল্লাহ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সকল বিচারালয় সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং স্বাধীনভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করছেন।
তিনি বলেন, বিচার কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে আপিল বিভাগের সকল রায় হাইকোর্ট বিভাগের জন্য বাধ্যতামূলক, হাইকোর্ট বিভাগের সকল রায় অধস্তন আদালতের জন্য বাধ্যতামূলক। সংবিধানের ১ শ ১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারিক আদালত যেভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করছেন সে ভাবেই পরিচালিত হবে। সুপ্রিমকোর্টের নিয়ন্ত্রণেই পরিচালিত হবে। যেহেতু সুপ্রিমকোর্টের একটি নিজস্ব রেজিস্ট্রার অফিস রয়েছে। এ কারণে পৃথকভাবে সুপ্রিমকোর্টের জন্য কোনো সচিবালয়ের প্রয়োজন নেই।
পৃথক সচিবালয়ের দাবি অগ্রহণযোগ্য, সংবিধান পরিপন্থী এবং প্রচলিত আইনেরও পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অজি উল্লাহ বলেন, ‘সংবিধানের ১ শ ১৬ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে মহামান্য রাষ্ট্রপতি যে গেজেটটি প্রকাশ করেছেন। সে টি আপিল বিভাগে দেওয়া হয়েছে। মাননীয় বিচারপতিগণ গেজেটটি গ্রহণ করেছেন। আপিল বিভাগে গেজেট গ্রহণ করে নতুন করে গেজেট সংশোধনের কোনো সুযোগ নাই। এ রকম দাবি জানানো হলে সেটি হবে আদালত অবমাননার শামিল।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আইনজীবী সমিতির সহসম্পাদক শফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম হিরু, সদস্য হাবিবুর রহমান, কুমার দেবুল দে ও নূরে আলম উজ্জ্বল প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেডকে/টিএম/এমআই