চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা: কাল কারাগারে বসতে পারে আদালত
৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:১৮ | আপডেট: ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৮:৪৮
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বুধবার (৫ আগস্ট) কারাগারে আদালত বসতে পারে বলে জানিয়েছেন মামলার সরকারপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
এ মামলার অন্যতম আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায়ে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে পুরাতন কারাগারে সাজা খাটছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
কাজল সারাবাংলাকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে এ মামলায় আদালতে হাজির করতে পারছেন না। কোনোভাবেই মামলাটির এগিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে মামলাটির বিচারকার্য পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী এজলাসে করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় মামলাটির বিচার কারাগারে করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বলে শুনেছি।’ যদি রাতের মধ্যেই এ সম্পর্কিয় গেজেট প্রকাশিত হয় তবে আগামী কালই ৫ সেপ্টেম্বর কেন্দীয় কারাগারে মামলাটি বিচার করা সম্ভব হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘আগামীকাল বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) একটি আদালত বসার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীকাল ওই আদালতে মামলা পরিচালনা করতে পারব বলে আমরা মনে করছি। আইন মন্ত্রণালয়ে আমরা আবেদন করেছি। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশের প্রস্তুতি নিয়েছে।’
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি কোন পর্যায়ে রয়েছে— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, মামলাটিতে ৩২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, তাদের পক্ষে যুক্তিতর্কও হয়েছে। আমাদের রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক হয়ে গেছে। আসামি পক্ষের যুক্তিতর্কও প্রায় শেষ। খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বাকি কিছু বক্তব্য শোনার পর হয়তো আদালত এই মামলার রায়ের জন্য তারিখ নির্ধারণ করবেন বলে আশা করছি।
পরে মোশাররফ হোসেন কাজল সারাবাংলাকে বলেন, কারাগারে আদালত বসানোর বিষয়ে আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। গেজেট প্রকাশ হলেই কারাগারে শুনানি শুরু হবে।
তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না। তবে কারাগারে আদালত বসলে সেটি আইনের পরিপন্থী হবে। এর আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি।
কারাগারে আদালত বসলে সেখানে তারা যাবেন কিনা, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শুনানি যেখানেই হোক, খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে আমাদের সেখানে উপস্থিত থাকতেই হবে।
দুর্নীতির এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার আগামীকাল ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামিন রয়েছে। এর আগে গত ৭ আগস্ট মামলাটি যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। তবে খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় ওই দিন তাকে আদালতে উপস্থিত করেনি কারা কর্তৃপক্ষ। পরে খালেদার জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। সেদিন শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ-৪-এর আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খালেদার জামিনের মেয়াদ বাড়ান। আগামীকাল মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির পরবর্তী তারিখ ঠিক করা আছে।
দুর্নীতির এই মামলায় মোট আসামি চার জন। খালেদা জিয়া ছাড়া অভিযুক্ত অন্য তিন আসামি হলেন— খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।
সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর