Saturday 27 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নোয়াখালীতে আমন ধানের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা চারদিক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:৪৭

আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি নোয়াখালীর চরাঞ্চলের অঞ্চলের কৃষকেরা। ছবি: সারাবাংলা

নোয়াখালী: নোয়াখালীর জেলায় মাঠে মাঠে আমন ধানের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা চারদিক। আমনের মাঠের যেদিকে তাকানো যায় সেদিকে শুধু সোনালি ধান। সোনালি ধানের সঙ্গে বাতাসে দুলছে কৃষকের স্বপ্নও। আমন ধান কেটে ঘরে তুলছেন নোয়াখালীর কৃষকেরা। চারদিকে পাকা ধানের মিষ্টি গন্ধ। ধান কাটার পর শুকাতে দিচ্ছেন অনেকে। আবার কেউ বাড়ি নিয়ে মেশিনে মাড়াই দিয়ে ঘরে তুলছেন। অনেকে খেতে মাড়াই করা ধান বিক্রি করে নগদ টাকা নিয়ে নিচ্ছেন ব্যাপারিদের কাছ থেকে। সবাই ব্যস্ত ধান কাটা, মাড়াই ও বেচাবিক্রিতে। এবার আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি নোয়াখালীর চরাঞ্চলের অঞ্চলের কৃষকেরা।

এবার নোয়াখালীতে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ একর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আর আমন চাষাবাদ হয়েছে ১লাখ ৫৬ হাজার ৪৬ একর। ইতিমধ্যে পাকা আমন ৯৮ শতাংশ কাটা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এবছর জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমন চাষের শুরুতে বিভিন্ন রোগ দেখা দিলেও ফলনে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। গত বছরে তুলনায় এ বছর ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। আর মাঠে মাঠে ধান কাটার উৎসব শুরু হয়েছে। এরপর হবে কৃষকের আঙিনায় ধানের ছড়াছড়ি, গোলাভরা ধান। ইতোমধ্যে হাট-বাজারে নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে।

সুবর্ণচর উপজেলার ১নং চরজব্বর ইউনিয়নের কৃষক মাহমুদুল হাসান জানান, এবছর তিনি ১৩ একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন । এবছর আমনের বাষ্পার ফলন হয়েছে। প্রতিএকরে ধান ফলন হয়েছে ৪৫থেকে ৫০ মণ। এ বছর ধানের দামও ভাল। প্রতিমণ ধান ১১০০ টাকা ধরে বিক্রি করছেন।

নিঝুম দ্বীপের ছেউয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হক। পালকির চরের পাশে দুই একর জমিতে ধান চাষ করেন তিনি। ধানখেতে দেখা হলো তার সঙ্গে। আব্দুল হক জানান, তার চাষ করা জমিটি লোনাপানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এ কারণে দেশি জাতের আমন চাষ করেছেন। জাতটি লোনাপানিতে তেমন একটা ক্ষতি হয় না। ইতিমধ্যে ধান কেটে খেতের মধ্যে মেশিনের সাহায্যে মাড়াই করে নিয়েছেন। পরিমাপ করে দেখা গেছে, দুই একর জমিতে প্রায় ৮০ মণ ধান পেয়েছেন। জমির পাশে রাস্তা না থাকায় ধানের বস্তা মাথায় করে হেঁটে বাড়িতে যাবেন।

হাতিয়ার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। দ্বীপ উপজেলা হওয়ায় এখানে বেড়িবাঁধের বাইরে ও ভেতরে দুই ধরনের ধান চাষ হয়। বেড়িবাঁধের বাইরে নিঝুম দ্বীপসহ চরাঞ্চলে আমনের দেশি জাত চাষ হয়। আর ভেতরে আমনের উফশী জাত চাষ হয়। এই বছর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে আমনে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই বছর হাতিয়ায় ৭৭ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দেশি জাতের আমন চাষ হয়েছে ১০ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে। উফশী জাতের আমন চাষ হয়েছে ৬৭ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে। তাতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৪৫০ টন।

হাতিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাছেদ সবুজ বলেন, এই বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সময়মত পরামর্শ দেওয়ায় তেমন কোনো সমস্যায় চাষিদের পড়তে হয়।

সুবর্ণচর উপজেলার কৃষি অফিসার হারুন অর রশিদ বলেন, এবার আমন ধান ৩৬ হাজার ৭শ ৩৬ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। পরিবেশ ভালো থাকায় গেল বছরের চেয়ে এবার ভালো ফলন হয়েছে। ধানের দামও বেশ ভালো।

সারাবাংলা/জিজি
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর