২০২৪ সাল থেকেই তার অপেক্ষায় ছিল পুরো বাংলাদেশ। নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০২৫ সালে স্বপ্নের লাল সবুজ জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছেন তিনি। হামজা চৌধুরীর এই আগমনেই যেন বদলে গেছে বাংলাদেশের ফুটবলের চালচিত্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশের ফুটবলের বদলে যাওয়ার গল্পের রচয়িতা তাই হামজাই।
ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে হয়ে খেলেছেন হামজা, কথা ছিল জাতীয় দলের হয়ে খেলাও। তবে শেষ পর্যন্ত সেটা হয়ে ওঠেনি। ২০২৩ সাল থেকেই গুঞ্জন ছিল, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চান হামজা। ২০২৪ সালের পুরোটাই কেটেছে অফিশিয়াল জটিলতা কাটাতে। বাংলাদেশের পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন, পেয়েছেন ফিফার অনুমতিও।
সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০২৫ সালের মার্চে বাংলাদেশে পা রাখেন হামজা। তার আগমনে দেশে সৃষ্টি হয় অভূতপূর্ব এক পরিবেশের। ঢাকা ও সিলেটে হামজাকে ঘিরে তৈরি হয় অবিশ্বাস্য এক উন্মাদনার। বহু বছর ফুটবল ইস্যুতে এমন মিডিয়া কভারেজ দেখা যায়নি বাংলাদেশের মাটিতে।
এশিয়ান বাছাইপর্বের ম্যাচে শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে অভিষেক হয় হামজার। নিজের প্রথম ম্যাচ থেকেই বাংলাদেশ দলের প্রাণভোমরা হয়ে উঠেছেন হামজা। সেই ম্যাচে জয়ের সুযোগ এলেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ।
২০২৫ সালে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে হামজা মাঠে নেমেছেন ৭ ম্যাচ, গোল করেছেন ৪টি। হামজার সঙ্গে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে এসে মাঠ কাঁপিয়েছেন শমিত সোম, ফাহমিদুলরাও।
হামজা-শমিতরা অবশ্য বাংলাদেশকে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের মূল পর্বে নিয়ে যেতে পারেননি। এই ব্যর্থতা অবশ্য ঘুচে গেছে বছরের শেষপ্রান্তে এসে। দেশের মাটিতে ২২ বছর পর ভারতকে হারিয়ে দারুণভাবেই বছরটা শেষ করেছে হামজার বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে জয়সূচক গোল করেন মোরসালিন।
পুরুষদের মতো নারী ফুটবলও ছিল আলোচনায়। ৩০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক এক সংবাদ সম্মেলন করে কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দেন নারী ফুটবল দলের ১৮ খেলোয়াড়।
সেই বিদ্রোহ একটা সময় থেমে যায়। বাছাইপর্ব উতরে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূল পর্বে ওঠে নারী জাতীয় দল। প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব–২০ এশিয়ান কাপের মূল পর্বেও জায়গা করে নেয় মেয়েরা। জুলাই মাসে সাফ অনূর্ধ্ব–২০ নারী ফুটবলে নেপালকে হারিয়ে শিরোপা জেতে বাংলাদেশ।
সাফল্য ব্যর্থতা মিলিয়ে ২০২৫ সালটা বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য ছিল নতুন এক মালিকফলক ছোঁয়ার বছর। ২০২৬ সালে হামজা-ঋতুপর্ণাদের জন্য অপেক্ষা করছে নতুন ইতিহাস গড়ার হাতছানি।