ঢাকা: রাজধানীর হাতিরঝিল থানার মগবাজার ওয়্যারলেস মোড় এলাকার একটি বাসা থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলো- আফরিদা চৌধুরী (১০) ও তার এক বছর বয়সী ভাই ইলহাম চৌধুরী। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য শিশু দুটির মরদেহ ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে ওয়্যারলেস মোড়ের একটি ভবনের নিচতলায় একটি ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সুমন মিয়া জানান, খবর পেয়ে শনিবার রাতে ওই বাসার নিচে ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে রাখা শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। তবে তাদের শরীরে কোনো রকমের জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, শিশুদের বাবা মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী একটি তৈরি পোশাক কারখানার জিএম এবং মা সাইদা জাকাওয়াত আরা গৃহিণী। তারা মগবাজারের ওই এলাকায় বসবাস করতেন।
প্রাথমিক তদন্তে স্থানীয় এবং পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দুই শিশু সন্তানসহ তাদের বাবা মা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মেয়ে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয়রা রাসমনো হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে শনিবার সকাল ৭টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর পরিবার যখন মেয়েটির মরদেহ বাসায় নিয়ে আসে তখন ছেলেটিও বমি করা শুরু করে। পরবর্তীতে তাকে মগবাজার কমিউনিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে শনিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলেটিও মারা যায়।
এসআই মো. সুমন মিয়া বলেন, একই খাবার খেয়ে তাদের বাবা মাও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তবে তারা চিকিৎসা শেষে সুস্থ আছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খাবারে বিষক্রিয়ার কারণে শিশু দুটির মৃত্যু হতে পারে। তবে ওই খাবার তারা বাসায় রান্না করেছিলেন নাকি বাইরে থেকে কিনে এনেছিলেন সে বিষয়ে জানা যায়নি। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এদিকে শিশুদের চাচা তৌহিদ আলম চৌধুরী জানান, ‘আফরিদা চৌধুরী বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গত ১৬ ডিসেম্বর ছিল আফ্রিদার জন্মদিন। বাবা-মা দুই বাচ্চাকে নিয়ে বাইরে কোনো এক রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়েছিলেন। চারদিন পরে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই খাবার খেয়ে তারা অসুস্থ হয়েছিল নাকি অন্য কোনো খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়েছে তা আমরাও বুঝতে পারছি না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে জানতে পারব।’