ঢাকা: প্রকাশ্য দিবালোকে জুমার জামাজের পর খুনি গুলি করে পার পেয়ে গেল। আজ আট দিন হয়ে গেল খুনিকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি। এই দুঃখে কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে। আমার ভাই হত্যার বিচার যেন প্রকাশ্যে এই বাংলার জমিনে দেখতে পাই।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজার পূর্ব মুহূর্তে তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার ভাই ওসমান হাদি শহিদ হয়েছে। ওসমান হাদি সব সময় শহিদি মৃত্যু কামনা করতো। হয়তো আল্লাহ তার সেই শহিদি মন নসিব করে দিয়েছেন। আট দিন হয়ে গেল, আমরা শহিদ ওসমান হাদির বিষয়ে কিছু করতে পারলাম নাই। এই দুঃখে কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে। আমরা ওসমান হাদির জন্য দোয়া করি। আমরা তার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য দোয়া করি।
বক্তব্যের পর আবু বকর সিদ্দিকের ইমামতিতেই ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। হাদির জানাজায় অংশ নিতে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় লাখ লাখ মানুষের ঢল নামে। খামারবাড়ি থেকে আসাদ গেট পর্যন্ত পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
এর আগে, শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে সিংগাপুর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৫৮৫ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছায় ওসমান হাদির মরদেহ। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হিমঘরে। তার আগে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩ মিনিটে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে ফ্লাইটটি রওনা হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার পর ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এবং ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজ থেকে হাদির মারা যাওয়ার খবর জানানো হয়। ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহিদ হিসেবে কবুল করেছেন।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে গত সোমবার সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। তবে এই ঘটনায় প্রধান আসামি ফয়সালকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃংখলা বাহিনী।