সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) লক্ষ্য করে বড় পরিসরের পালটা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেনাদের ওপর সাম্প্রতিক এক হামলার জবাবে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সিরিয়াজুড়ে আইএসের ওপর লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সিরিয়ায় আইএস সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে আসছিল। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সন্দেহভাজন আইএস হামলার পর প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, ‘হামলাগুলোতে আইএস যোদ্ধা, অবকাঠামো ও অস্ত্রাগার লক্ষ্য করা হয়েছে। অভিযানটির নাম ছিল ‘অপারেশন হকআই স্ট্রাইক’। এটি যুদ্ধের সূচনা নয়, এটি প্রতিশোধের ঘোষণা। আজ আমরা আমাদের শত্রুদের শিকার করেছি এবং হত্যা করেছি। আমরা তা চালিয়ে যাব।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, ‘সিরিয়ার সরকার এই হামলায় পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে।’
এক মার্কিন কর্মকর্তার মতে, মধ্য সিরিয়াজুড়ে ৭০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। এ অভিযানে এফ-১৫ ও এ-১০ যুদ্ধবিমান, অ্যাপাচি হেলিকপ্টার এবং হিমার্স রকেট সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।
এদিকে মার্কিন সেনাবাহিনীর তথ্যমতে, গত ১৩ ডিসেম্বর (শনিবার) মধ্য সিরিয়ার পালমিরা শহরে একটি হামলায় দুই মার্কিন সেনা ও এক বেসামরিক দোভাষী নিহত হন। হামলাকারীটি মার্কিন ও সিরীয় বাহিনীর একটি কনভয় লক্ষ্য করে হামলা চালায় এবং পরে গুলিতে নিহত হয়। ওই হামলায় আরও তিনজন মার্কিন সেনা আহত হন। বর্তমানে সিরিয়ায় প্রায় এক হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে।
সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলাকারী সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং আইএসের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের পর গত বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন। বর্তমানে সিরিয়ার সরকার সাবেক বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে গঠিত, যাদের মধ্যে আল-কায়েদার সাবেক শাখার সদস্যরাও রয়েছেন যারা পরে সংগঠনটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আইএসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন। আইএসবিরোধী লড়াইয়ে সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে সহযোগিতা করে আসছে। গত মাসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা হোয়াইট হাউজে সফর করলে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা হয়।