ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলতাফ হোসেন কর্তৃক ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদীকে ‘জংলি’ আখ্যা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নারী শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করে। এসময় তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারসহ ৫ দাবি জানান।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘হাদিকে যিনি জংলি বলেন, তিনি নিজেই জঞ্জাল’, ‘শিক্ষকদের কাছ থেকে জাতি আলোকিত দিকনির্দেশনা চায়, অশুভ ভবিষ্যদ্বাণী নয়’, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন শিক্ষক থাকা মানে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্তির লাইসেন্স দেওয়া’, ‘আপনি জংলি কাকে বলেন? জুলাই যোদ্ধাকে?’, ‘পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক আলতাফ রাসেলের স্থায়ী বহিষ্কার নিশ্চিত করতে হবে’, ‘হাদি ভাইয়ের মতো আমরা সবাই জংলি, এই জঙ্গলে আমরা এমন শিক্ষক চাই না’ এবং ‘জান দেব, জুলাই দেব না’ ইত্যাদি লিখা সংবলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন।
অন্য দাবিগুলো হলো— হাদির খুনিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার করা, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের সকল অপতৎপরতা বন্ধ করে রাঘব বোয়ালদের বিচার নিশ্চিত করা, ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এমন মনোভাব প্রকাশ করে, তাদের স্থায়ী বহিষ্কারসহ শাস্তির ব্যবস্থা করা, ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী অন্যতম নায়ক শহিদ আবরার ফাহাদ এবং শহিদ ওসমান হাদির নামে হল বা স্থাপনার নামকরণ করা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী শহিদ ওসমান হাদিকে জংলি বলে কটূক্তি শুধু একজন শহিদের অবমাননা নয়, বরং এটি দেশের জন্য আত্মত্যাগ এবং সমগ্র জাতির সম্মানের উপর সরাসরি আঘাত। যে শিক্ষক জাতির বিবেক গঠনের দায়িত্বে থাকে। তার মুখে এমন অমানবিক ও ফ্যাসিস্ট মানসিকতার প্রকাশ কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ধমনিতে ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী রক্ত প্রবাহিত, সেখানে শিক্ষক হয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা এবং ইতিহাস বিকৃত করে শিক্ষাঙ্গণ কলুষিত করা কোনোভাবে কাম্য নয়। যদি এখন এসব শিক্ষক কর্মকর্তা, কর্মচারীকে শাস্তি দেওয়া না হয়, তবে কাল আবারও শহিদদের অবমাননা করা হবে এবং নতুনভাবে ফ্যাসিস্ট মাথাচাড়া দেবে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাদিকে কটূক্তি করে এক ফেসবুক পোস্ট দেন ওই শিক্ষক। নিজস্ব ফেইসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুরের সময় বললেন ১৫ বছরের শাসনের ক্ষোভ। ৩২ ভাঙচুরে ও অগ্নিসংযোগের সময়ও তাই বললেন। আজ প্রথম আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে, এখন কি বলবেন? ওসমান হাদির মতো একটা জংলি পুলার জন্য এতো আবেগ তুললে যা হওয়ার তাই হয়েছে। এখনো যারা আক্রান্ত হয় নাই, ভাবছেন বেঁচে গেছেন? না, ধীরে ধীরে সবাই আক্রান্ত হবেন। প্রথম আলো জ্বালিয়ে দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমি এই পত্রিকার অনেক কিছুর সঙ্গে দ্বিমত করলেও সংবাদ মাধ্যমে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম। এই গণমাধ্যম টিকিয়ে রাখতে হবে।’