ঢাকা: জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিরপুর, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, পল্টন, ধানমন্ডি, বনানী ও বিমানবন্দর এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাজধানীর মিরপুর, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, পল্টন, ধানমন্ডি, বনানী ও বিমানবন্দর এলাকায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সড়কের পাশে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। এসময় নিরাপত্তা তল্লাশীর জন্য চেকপোস্টও দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে সড়কে নেমে পড়ে বিক্ষুদ্ধ জনতা। আর এই জনতার একটা অংশ বিক্ষোভ থেকে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এরপর রাত সাড়ে ১২টার পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এমনকি, উত্তরায় আওয়ামী লীগ এক নেতার বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এছাড়া, ছায়ানটেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলা আর ভাঙচুরে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটি। রাজধানীর এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়ন করা হয়। বিজিবি জানায়, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির মরদেহ আজ ঢাকায় নিয়ে আসা হবে। এ লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিমানবন্দর এলাকা, কারওয়ানবাজার ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণস্থানে বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে।
ছায়ানটের সামনে নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খলিলুর রহমান বলেন, সকাল থেকে আমরা এখানে দায়িত্বে আছি। সকাল থেকে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে গত সোমবার সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। আর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সারে ৯টার দিকে ওসমান হাদি মারা যান। তবে এই ঘটনায় প্রধান আসামি ফয়সালকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃংখলা বাহিনী।