Tuesday 16 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভোট রক্ষা করা দেশ রক্ষার সমান দায়িত্ব: প্রধান উপদেষ্টা

সারাবাংলা ডেস্ক
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৫৫

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ভোট রক্ষা করা দেশ রক্ষা করার সমান দায়িত্ব। ভোট রক্ষা করুন। দেশকে রক্ষা করুন। ভোট দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার গাড়ির চাকা। এই চাকা কাউকে চুরি করতে দেবেন না।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এবারের নির্বাচন ও গণভোট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথরেখা নির্ধারণের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা কোন ধরনের রাষ্ট্র প্রত্যাশা করি তা নির্ভর করবে গণভোটের ফলাফলের ওপর। এই ভোটের মাধ্যমে ঠিক হবে নতুন বাংলাদেশের চরিত্র, কাঠামো ও অগ্রযাত্রার গতিপথ।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এই নির্বাচন হোক সত্যিকার অর্থে উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ এবং সর্বোপরি সুষ্ঠু। নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা, প্রশাসনিক প্রস্তুতি, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং পর্যবেক্ষণের প্রতিটি ধাপকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

নতুন বাংলাদেশ গঠনের দায়িত্ব সবার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের মূল্যবান ভোটই আমাদের রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। তাই ভোটকে শুধুই কাগজে একটি সিল মারার আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে দেখলেই হবে না; বরং এটি হবে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণে আপনার সক্রিয় অংশগ্রহণ, গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা এবং দেশকে এগিয়ে নিতে সরাসরি অবদান। দেশের মালিকানা আপনাদের হাতে, আর সেই মালিকানারই স্বাক্ষর আপনার ভোট।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা ও পবিত্রতা রক্ষার জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকা অপরিসীম। আমি দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি উন্মুক্ত আহ্বান জানাচ্ছি—আপনারা একে অপরকে প্রতিযোগী হিসেবে দেখবেন, কখনো শত্রু হিসেবে দেখবেন না। নির্বাচনের মাঠে এমন একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করুন, যাতে দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা ভোট বাক্স ডাকাতি করবে তারা দেশের মানুষের স্বাধীনতা হরণকারী। তারা নাগরিকদের দুশমন। তাদের থেকে নাগরিকদের রক্ষা করা আমাদের সবার অবশ্য কর্তব্য। ভোট জনগণের ভবিষ্যৎ রচনার অক্ষর। ভোট বাক্সে ভোট জমা দিতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ আর রচনা করা যাবে না। আপনার ভোট আপনি সযত্নে ভোট বাক্সে দিয়ে আসুন। কেউ বাধা সৃষ্টি করলে তাকে সুশৃংখলভাবে প্রতিহত করুন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিন।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে প্রশাসনকে আরও কার্যকর, নিরপেক্ষ ও নির্বাচনি পরিবেশের উপযোগী করতে সরকার মাঠ প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনে বেশ কিছু রদবদল করেছে। এই পরিবর্তনগুলো কারও প্রতি অনুরাগ বা বিরাগ প্রসূত নয়। এগুলো করা হয়েছে দক্ষতা, যোগ্যতা এবং পেশাগত সক্ষমতার ভিত্তিতে। আমাদের লক্ষ্য একটাই—দেশের প্রতিটি ভোটার যেন ভোট দিতে পারেন নিরাপদ পরিবেশে, ভয়মুক্ত মনে এবং সর্বোচ্চ স্বাধীনতায়।’

নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে আরও কোনো পদক্ষেপ প্রয়োজন, তা কমিশন অবশ্যই গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর