ঢাকা: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনই দেশের ভবিষ্যৎ ও জনগণের ভাগ্য নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিজয় দিবসের চেতনায় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সংগ্রামে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন দল ও জামায়াতে ইসলামীর অতীত রাজনৈতিক ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ছাত্রদের হত্যাকাণ্ড, মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠন, আমাদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার সময় আপনারা কোথায় ছিলেন?”
তিনি বলেন, ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায় না। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনামলের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এরশাদের সঙ্গে কারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, তা দেশের মানুষ ভালো করেই জানে।
“ওই প্রহসনের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তই বিএনপিকে ১৯৯১ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় এনেছিল। অথচ সে সময় আওয়ামী লীগ ও জামায়াত জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছিল,”—বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি কখনো লোভের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। গত ১৭ বছর ধরে নির্যাতন, মামলা, গ্রেপ্তার ও নিপীড়নের শিকার হয়েও বিএনপি লড়াইয়ের ময়দান ছাড়েনি। এখন নানা ধরনের লোভ দেখানো হচ্ছে—এই দুনিয়ায় না পেলে নাকি অন্য দুনিয়ায় পাওয়া যাবে। কিন্তু দেশের মানুষ খুব সচেতন, তারাই শেষ পর্যন্ত বিচার করবে।
বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এই দিবস কেবল অতীত স্মরণের নয়, বরং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের দিন। বিজয় দিবসের চেতনাকে ধারণ করে সবাইকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিজয় দিবসের পরপরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচন দেশের দিকনির্দেশনা ঠিক করবে। তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই একমাত্র নেতা যিনি দেশের সাধারণ মানুষের বাস্তব সমস্যার কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরছেন।
“শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, নারী ও শিশু, শ্রমিক ও কৃষকদের কল্যাণে তারেক রহমান সুস্পষ্ট পরিকল্পনা দিয়েছেন। এটাই মানুষের জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনতে পারে,”—বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শ ও ত্যাগকে ধারণ করেই বর্তমান রাজনৈতিক সংগ্রাম এগিয়ে চলছে। “এই লড়াই শুধু ক্ষমতার নয়, দুর্নীতি ও দুঃশাসনে বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনের লড়াই,”—উল্লেখ করেন তিনি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আধ্যাত্মিক পুরস্কারের কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত না করে, এই পৃথিবীতে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতিই জরুরি। সে লক্ষ্যেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচনে বিজয় অর্জনের আহ্বান জানান তিনি।