ঢাকা: ‘স্বাধীনতা অর্থবহ ও সুসংহত করতে না পারলে তা পরাধীনতার শামিল’-বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণ যে প্রত্যাশা ও স্বপ্ন নিয়ে এগিয়েছে, তা বাস্তবায়নে নাগরিকদের সক্রিয় ভূমিকা অব্যাহত রাখা জরুরি। তিনি সতর্ক করে বলেন, “২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর যদি জনগণ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, তবে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা সম্ভব হবে না।” তাঁর মতে, গণতন্ত্রের পথে উত্তরণকে বিলম্বিত করতে ও এই সংগ্রামকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বর্তমানে বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্র চলছে।
বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামকে অপমানিত করার অপচেষ্টা চলছে এবং যেন গণতন্ত্রে উত্তরণ সহজ না হয়—সে লক্ষ্যে নানা কৌশল নেওয়া হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নাগরিক সমাজকেও সজাগ ও সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ২৫ ডিসেম্বরকে জাতির জন্য একটি স্মরণীয় ও ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেন, ১৯৭১ সালের পর থেকেই দলটি জাতির ইতিহাসকে বিকৃত ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার শুরু করেছে।
তারেক রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা সংক্রান্ত প্রচলিত বর্ণনাকেও চ্যালেঞ্জ করেন। তার দাবি, ২৫ ও ২৬ মার্চের রাতে স্বাধীনতার প্রথম ঘোষণা দিয়েছিলেন তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান। তিনি অভিযোগ করেন, পরবর্তীতে ঘোষণাপত্রের চতুর্থ অনুচ্ছেদে একটি ‘ভুল বক্তব্য’ সংযোজন করে শেখ মুজিবুর রহমানকে কেন্দ্র করে ইতিহাসকে একতরফাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “সঠিক জ্ঞান ও যোগ্যতার ভিত্তিতে জাতি এগোলে তবেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।” এজন্য তিনি সবাইকে প্রকৃত ঐতিহাসিক দলিলপত্র অধ্যয়নের আহ্বান জানান।
বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে সুসংহত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।