ঢাকা: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, জুলাই আন্দোলনের সম্মুখ সারির নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের এমপি (স্বতন্ত্র) প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বলেন, ‘আমরা সবাই জানি ১২ তারিখ যে হাদির ওপর হত্যাচেষ্টায় গুলি করা হয়েছে সেই হাদির নাম আজ সারাবিশ্ব জেনে যাচ্ছে। তার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর ছড়িয়ে পড়ছে। আমাদের এখন কালচারাল ফ্যাসিজম উন্থাপন হয়েছে হাদির এ ভয়েজ পছন্দ হচ্ছে না, এ জন্য দুনিয়া তেকে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অধ্যাপক ড. ইউনূস যে ৩ জিরোর কথা বলেছেন। জুলাই যোদ্ধারও ৩ জিরো বাস্তবায়নের রুপরেখা দিয়েছিল। আজ আমরা যে হাদিদের জন্য, যে জুলাই যোদ্ধাদের জন্য কথা বলতে পারছি তাদের প্রটেকশন আমাদের দিতে হবে। আমদের সবাইকে তাদের সঙ্গে থাকতে হবে।’
মানববন্ধনে জবি চ্যাপ্টারের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান সাদী বলেন, ‘এ জুলাইয়ে পর আমরা কথা বলতে পারছি, এটা সম্ভব হয়েছে জুলাই যোদ্ধাদের প্রাণের বিনিময়ে। হাদির মত কিছু প্রাণ কেড়ে নিতে পারলে জুলাই চেতনা বন্ধ হবে। আমরা তা হতে দিতে চাই না। শোষিত নিপীড়ন জনগণের কথা বলতে প্রয়োজন হাদির মত মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনে মাধ্যমে এমন একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সৃষ্টি হোক যাতে সবাই হাদির মত কথা বলতে পারবে। হাদিদের মত যারা মুক্তমনা আছে তারা নিরাপত্তা পাবে। হাদিরা মরে না, মরবে না। হাদিরা আবার জন্মাবে। একটা সময় আমরা প্রকৃতভাবেই একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পাব।’
তিনি বিচার চেয়ে বলেন, ‘যারা হাদির আক্রমনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার আমাদের এখন দাবি।‘
ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন বলেন, ‘ওসমান হাদি সম্পর্কে যত জানতে যাই ব্যক্তিগতভাবে তত আকৃষ্ট হই। তিনি সহকর্মীর সহায়তার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগশিকার করেছেন। একটি দেশে একদিকে যেমন রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদ থাকে, তেমন সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ রয়েছে। আজ রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদ পালিয়েছে কিন্তু যারা সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ তারা এখনো বাংলাদেশে বিদ্যমান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ মানুষের থেকে চাঁদা নিয়ে ইলেকশন করে কিন্তু ওসমান হাদি খালি হাতে নির্বাচনে এসেছে। নির্বাচনে যেখানে মানুষকে টাকা দিতে হয় সেখানে হাদিকে মানুষ টাকা দিত। হাদি সাধারণ মানুষের কথা বলে, যারা আধিপত্য নিয়ে কাজ করেন, যারা ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চান তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে, কাজ করেছেন। হাদি শিক্ষক, শ্রমিক, কৃষকের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন।’
অপরাধীকে আটক বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হাদিরকে প্রকাশ্য গুলি করা হলো, কিন্তু তাকে হামলাকারীকে আটক করা হয়নি। আমরা সামাজিকমাধ্যমে বিভিন্ন আপডেট পেয়ে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষকেরা বলতে চাই তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে, কোনো অবেহলা করা চলবে না।’
অধ্যাপক বিল্লাল হোসেন দাবি নিয়ে বলেন, ‘হাদি পরিষ্কার করে বলেছেন, জীবন দিব, জুলাই দিব না। আমি পরিষ্কার করে ২টি বিষয় জানাতে চাই। অপরাধী গ্রেফতারের কোনো তালবাহানা চলবে না। যার নাম বলা হচ্ছে এটার পিছনে কারা, কারা টাকা যোগান দিয়েছে তাদের দেখতে চাই ও তাদের গ্রেফতার চাই।’
মানববন্ধনের পর যুহরের নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হাদির সুস্থতা কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।মানববন্ধনের পর যুহরের নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হাদির সুস্থতা কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।