Monday 15 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে প্রসিকিউশনের আপিল আজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:০৭ | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৪০

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -কোলাজ ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করবে প্রসিকিউশন।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানান, শেখ হাসিনার আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আজ আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করা হবে। আপিল দাখিলের পর বিস্তারিত বিষয়ে ব্রিফিং করা হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে গত ২৭ নভেম্বর প্রসিকিউশন শেখ হাসিনার সাজা বাড়াতে আপিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। গাজী এমএইচ তামিম ওইদিন বলেন, ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে একটি অভিযোগে দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ডের শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যেই এ আপিল করা হবে।

বিজ্ঞাপন

গত ১৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং আরেকটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। একই সঙ্গে দেশে থাকা তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার ৯ দিন পর এর পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। ফলে রায় প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে আসামিদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে।

এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ উত্থাপন করে প্রসিকিউশন। তবে রায়ে ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে ছয়টি ঘটনা বিবেচনায় নেন।

প্রথম অভিযোগে তিনটি ঘটনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে— ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ আখ্যা দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া; একই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য মাকসুদ কামালের সঙ্গে ফোনালাপে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে ফাঁসি দেওয়ার হুমকি ও নির্দেশ; এবং এসব বক্তব্য ও নির্দেশের পর অধীনস্তদের অপরাধ সংঘটনে বাধা না দেওয়া। এর ফলশ্রুতিতে রংপুরে পুলিশ গুলিতে আন্দোলনকারী আবু সাঈদ নিহত হন। এসব ঘটনায় শেখ হাসিনা ও কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগেও তিনটি ঘটনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর প্রথমটি ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর ফোনালাপ, যেখানে ড্রোনের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের অবস্থান শনাক্ত এবং হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। দ্বিতীয় ঘটনা একই বছরের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার ঘটনা। তৃতীয় ঘটনা সেদিনই সাভারের আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর তাদের লাশ পুড়িয়ে ফেলা।

এসব অপরাধে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয় এবং তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। উভয় অভিযোগেই সাবেক আইজিপি মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর