ঢাকা: ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন, ভূমি রেজিস্ট্রেশন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে হওয়া উচিত।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সহজে ভুমিসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ভূমি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কার্যাবলি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার লক্ষ্যে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিনিয়র সচিব বলেন, বাংলাদেশে ভূমি ব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিন ধরেই জটিল ও জনগণের ভোগান্তি হিসেবে পরিচিত। ভূমিসংক্রান্ত জটিলতার অন্যতম বড় কারণ হলো ভূমি প্রশাসন ও ভূমি রেজিস্ট্রেশনের আলাদা নিয়ন্ত্রণ। বর্তমানে ভূমি প্রশাসন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে হলেও ভূমি রেজিস্ট্রেশনের কাজ পরিচালিত হয় আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। এই বিভাজন প্রশাসনিক অসামঞ্জস্য সৃষ্টি করেছে এবং ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করে তুলেছে।
তিনি বলেন, আমরা সকলে জনগণের জন্য কাজ করি তাই জনগণের দুর্ভোগ কমানোর জন্য আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। এখানে কে কোন মন্ত্রণালয় কাজ করছেন সেটা প্রধান নয়, মূল কথা হচ্ছে জনগণকে কতটুকু সেবা দিতে পেরেছি। ভূমি রেজিস্ট্রেশন মূলত ভূমি ব্যবস্থাপনারই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। জমির মালিকানা হস্তান্তর, দলিল লেখা, নামজারি ও খতিয়ান সংশোধন সবকিছুই একই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত। অথচ এই একই প্রক্রিয়ার দায়িত্ব যখন ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকে, তখন তথ্যের সমন্বয় ব্যাহত হয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ঘটে এবং দুর্নীতির সুযোগ বাড়ে।
তিনি আরো বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভূমি রেজিস্ট্রেশন আনা হলে আরো সহজ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এতে ভূমিসংক্রান্ত সব তথ্য এক প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাবে। ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন আরও কার্যকর হবে। একই সঙ্গে দলিল জালিয়াতি, দ্বৈত নিবন্ধন ও কাগজপত্রের অসামঞ্জস্য অনেকাংশে কমে আসবে। বর্তমানে দেখা যায়, একটি জমি কেনার পর মালিকানা নিশ্চিত করতে বছরের পর বছর লেগে যায়। ভূমি রেজিস্ট্রেশন যদি ভূমি মন্ত্রণালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে থাকে, তবে জনগণের ভোগান্তি কমানো সম্ভব হবে। এছাড়া, ভূমি রেজিস্ট্রেশনকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন করা হলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরবে, দুর্নীতি কমবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ এর সভাপতিত্বে সভায় ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এজেএম সালাউদ্দিন নাগরী, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান(গ্রেড-১) ড. মো: মাহমুদ হাসানসহ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিববৃন্দ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।