ঢাকা: দেশের উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষায় বনায়ন জোরদার ও কৃষিজমি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; পানি সম্পদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, উপকূলের সমস্যা দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। এসব সংকট মোকাবিলায় স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে বাস্তবসম্মত ও দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয় সরণিতে বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী জাতীয় উপকূল সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, প্রতিদিন নতুন নতুন দুর্যোগ সৃষ্টি হচ্ছে, প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৃষিজমি ধ্বংস হচ্ছে। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে, বাড়ছে দারিদ্র্য ও পানিসংকট। একইসঙ্গে জলবায়ু উদ্বাস্তু, মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ এবং কার্বন শোষণ হ্রাসের মতো সংকট আরও গভীর হচ্ছে।
তিনি বলেন, উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও অনিয়ন্ত্রিত চিংড়িঘেরের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পরিকল্পনা বাতিল হলেও ক্ষতির বোঝা সরকারকেই বহন করতে হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে নীতিগত সিদ্ধান্ত অর্থহীন হয়ে পড়বে।
সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন অবকাঠামো ও নৌযান চলাচলের সমস্যার কথা তুলে ধরে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এতে জীবিকানির্ভর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই তাদের জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করা জরুরি। এ লক্ষ্যে কোস্ট, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহায়তাও বিবেচনায় রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে বিপুল জনগোষ্ঠীর বসবাস। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্টে একটি শক্তিশালী ও আলাদা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। পানি সম্পদ, নদী রক্ষা, পরিবহন ও কৃষি খাতকে সমন্বিতভাবে বিবেচনার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় উপকূল সম্মেলনের আহ্বায়ক গওহার নঈম ওয়ারা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সম্মেলনে দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলার তিন শতাধিক প্রতিনিধি, গবেষক, শিক্ষার্থী ও উপকূলবাসী অংশ নেন।