চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং, কনটেইনার টার্মিনালসহ (এনসিটি) বিভিন্ন স্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে ‘লাল পতাকা গণমিছিল’ করেছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। বন্দর ভবন অভিমুখে শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে যাবার চেষ্টা করলেও পুলিশের বাধায় তারা এগোতে পারেনি।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় নগরীর দেওয়ানহাট মোড়ে চট্টগ্রাম জেলা স্কপের পক্ষ থেকে গণজমায়েত ও সমাবেশ শুরু হয়। এতে একাত্মতা প্রকাশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোটভুক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। সমাবেশ শেষে বেলা ১২টার দিকে বন্দর ভবন অভিমুখে মিছিল শুরু হয়। এতে স্কপের বিভিন্ন সংগঠনের কয়েক হাজার শ্রমিক-কর্মচারী অংশ নেন।
স্কপের সংগঠক ফজলুল কবীর মিন্টু সারাবাংলাকে জানান, ‘মিছিল আগ্রাবাদ বাদামতল মোড় পৌঁছার পর পুলিশ তাদের আটকে দেয়। পরে তারা সেখানে আরেকদফা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে কর্মসূচি শেষ করেন।’
সমাবেশে স্কপভুক্ত সংগঠন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত বলেন, ‘স্কপ ধারাবাহিকভাবে স্মারকলিপি, সংবাদ সম্মেলন, বিক্ষোভ, গণঅনশন, অবরোধ ও মশাল মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে এবং এতে জনগণের সমর্থন ক্রমেই বাড়ছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগমুহূর্তে সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ন্যূনতম অধিকার নেই। চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড এবং কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নৈতিক বা আইনগত ভিত্তি নেই।’
বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ‘ইজারা’ দিলে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, ‘নৌ পরিহবন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা দৈনিক আড়াই কোটি টাকা ‘ঘুষ বাণিজ্য’ হয় বলে অভিযোগ করেছেন। গত দেড় বছর আপনারা ক্ষমতায় ছিলেন, এই সময় কীভাবে ঘুষ-দুর্নীতি হয় তার জবাব জনগণকে দিতে হবে।’
টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইফতেখার কামাল খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দিন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি খোরশেদুল আলম, বিএফটিইউসি চট্টগ্রাম বিভাগের যুগ্ম সম্পাদক ইজওয়ানুর রহমান খান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের হেলাল উদ্দিন কবির।