Tuesday 09 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠনে ‘গণসংহতি‘র ১১ দফা প্রস্তাবনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:১৫ | আপডেট: ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:১৬

গণসংহতি আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত করার দাবি জানিয়ে ১১ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।

আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবনাগুলো উপস্থাপন করেন নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

কেন্দ্রীয় সদস্য জুলহাসনাইন বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। উপস্থিত ছিলেন বাচ্চু ভূইঁয়া, মনিরুল হুদা বাবন, আমজাদ হোসেন, গোলাম মোস্তফা, জাহিদ সুজনসহ নেতা-কর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “দুর্নীতি এখন বাংলাদেশের এক দীর্ঘস্থায়ী ও সর্বব্যাপী সমস্যা। প্রশাসন, পুলিশ, ভূমি অফিস, কর ও রাজস্ব, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে কৃষি ও শিল্প বিভাগ- সবক্ষেত্রেই দুর্নীতি এক জটিল ‘বাস্তুতন্ত্র’ সৃষ্টি করেছে, যা উৎপাদনশীলতা, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যবস্থার বদল দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া হলেও তা শুরু করতে প্রয়োজন আমূল সংস্কার।

গণসংহতি আন্দোলনের ১১ দফা প্রস্তাব

  • উৎপাদনশীল অর্থনৈতিক রূপান্তর: বখরাতন্ত্রের অবসান, তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এবং অনানুষ্ঠানিক খাতে আইনগত নিয়ন্ত্রণ।
  • দুদকের পূর্ণ স্বাধীনতা: তদন্তে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পরিবেশ, যথেষ্ট বাজেট, প্রযুক্তি ও জনবল নিশ্চিত করা।
  • আর্থিক খাত সংস্কার: ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক বরাদ্দ বন্ধ, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা।
  • ই-টেন্ডার বাধ্যতামূলক: সরকারি ক্রয়ে সব তথ্য ওপেন ডেটা পোর্টালে প্রকাশ এবং বড় প্রকল্পে আন্তর্জাতিক মানের অডিট।
  • সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা: মেধা ও কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে পদোন্নতি, সম্পদ বিবরণ বাধ্যতামূলক এবং দুর্নীতিতে কঠোর শাস্তি।
  • গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: জনগণের তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করা এবং তথ্য গোপনের অযৌক্তিক আইন বাতিল।
  • সেবাখাতে ডিজিটালাইজেশন: লাইসেন্স, অনুমোদন, জমি রেজিস্ট্রি ডিজিটাল করা; ঘুষ কমাতে মানবসম্পৃক্ততা হ্রাস; ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু।
  • তথ্যদাতার সুরক্ষা: দুর্নীতি সম্পর্কিত তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখা ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করা।
  • বিচার ব্যবস্থার সংস্কার: রাজনৈতিক চাপমুক্ত আদালত, বড় দুর্নীতি মামলার জন্য পৃথক ট্রাইব্যুনাল ও আধুনিক ফরেনসিক সক্ষমতা বৃদ্ধি।
  • হয়রানিমুক্ত সেবা: সরকারি অফিসে অভিযোগ বক্স স্থাপন ও অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি।
  • নৈতিকতা শিক্ষা: স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করে দুর্নীতিকে সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য করে তোলা।

গণসংহতি আন্দোলন দাবি করে, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দুর্নীতির লুণ্ঠনতন্ত্র ভেঙে একটি জবাবদিহিমূলক, উৎপাদনশীল ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ খুলে যাবে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর