রংপুর: নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে দেশজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে রোকেয়া দিবস। এরই ধারাবাহিকতায় রোকেয়ার নিজ গ্রাম রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামে ভোরের প্রথম আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই ভক্তদের পায়ের ছাপ পড়তেই উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়ে। এই মহীয়সী নারীর স্মৃতিবিজড়িত জন্মভূমিতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে।
পায়রাবন্দে সকালে রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসানের নেতৃত্বে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় কর্মসূচি। জাতীয় সংগীতের পর আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, রোকেয়া মেলা এবং তার সাহিত্য নিয়ে পাঠচক্রের মতো আয়োজন গ্রামকে উৎসবমুখর করে তোলে।
বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বক্তারা বলেন, রোকেয়া কেবল সাহিত্যিক বা সমাজসংস্কারক নন, তিনি নারী মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা; যার লেখনী আজও সমতা, শিক্ষা এবং সামাজিক পরিবর্তনের প্রেরণা। তার স্বপ্নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
স্থানীয়রা জানান, এই দিনে গ্রামে দূর-দূরান্ত থেকে আগত মানুষের ভিড়, হস্তশিল্প মেলা এবং সাংস্কৃতিক উপকরণের প্রদর্শনী তার অমর আদর্শকে জীবন্ত করে।
এদিকে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবসটি পালিত হয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে। উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলীর নেতৃত্বে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব বলেন, বেগম রোকেয়ার পথ অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে, যা যুগোপযোগী শিক্ষার প্রসার ঘটিয়েছে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আজম বলেন, বেগম রোকেয়ার বাস্তববাদী লেখনী নারীকে স্বাধীন ও আত্মনির্ভর করার সংগ্রামে অনন্য।
বিশেষ অতিথি গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, রোকেয়ার অরাজনৈতিক জ্ঞানভিত্তিক আদর্শ নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। সভায় ‘রোকেয়া-পাঠ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন এবং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।