সাতক্ষীরা: অপহরণের দুই দিন পর দাবি করা মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করে সুন্দরবন থেকে বাড়ি ফিরেছেন ৮ জেলে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা পরিশোধের পর বনদস্যুরা তাদের মুক্তি দেয়।
ফিরে আসা জেলেরা হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ (৫০), আনারুল ইসলাম (২২), ইব্রাহিম হোসেন (৪৫), নাজমুল হোসেন (৩৪), আনোয়ার হোসেন (৩২), শামীম হোসেন (৩৬), আবুল কাশেম (৩৬) এবং হরিনগরের জেলেপাড়ার মজিবুল ইসলাম (৩৫)।
এর আগে রোববার ভোরে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের মালঞ্চ নদীসংলগ্ন হাঁসখালী, চেলাকাটা ও হেতালবুনে খালে কাঁকড়া শিকার করার সময় বনদস্যু ‘ডন বাহিনীর’ পরিচয়ে তিনটি নৌকায় ৯-১০ জন অস্ত্রধারী তাদের ঘিরে ধরে। পরে প্রতি নৌকা থেকে একজন করে জেলেকে তুলে নেওয়ার পাশাপাশি জনপ্রতি ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
ফিরে আসা জেলে আনারুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২ ডিসেম্বর কদমতলা বন অফিস থেকে বৈধভাবে পাস নিয়ে তারা সুন্দরবনে কাঁকড়া শিকার করতে যান। রোববার ভোরে মালঞ্চ নদীসংলগ্ন হাঁসখালী খালে কাঁকড়া ধরার সময় সশস্ত্র একদল বনদস্যু তাকে ও পাশের আরও দুইটি নৌকা থেকে কয়েকজনকে অপহরণ করে।’
একই গ্রামের জেলে নাজমুল হোসেন জানান, অপহরণের পর তাদের পশ্চিম সুন্দরবনের শেষভাগে কুঞ্চির খাল এলাকায় একটি নৌকায় আটকে রাখা হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে দস্যুরা মাথাপিছু ৪০ হাজার টাকা দাবি করে। অনেক কাকুতি-মিনতির পর মাথাপিছু ২৫ হাজার টাকা দিতে বলা হয়। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকাশে টাকা পাঠানোর পর সোমবার রাতেই তাদের একটি নৌকায় তুলে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তারা লোকালয়ে ফেরেন।’
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক বলেন, ‘মালঞ্চ নদীসংলগ্ন হাঁসখালী, চেলাকাটা ও হেতালবুনে খালে কাঁকড়া শিকার করার সময় দস্যুরা তাদের অপহরণ করে। বন বিভাগের স্মার্ট প্যাট্রল টিমসহ একাধিক দল সুন্দরবনজুড়ে টহল দিচ্ছে এবং একাধিক অভিযানও পরিচালনা করেছে। তবে ভারী অস্ত্র ও লোকবল সংকটে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনায় কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলেও তিনি জানান।’
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদুর রহমান বলেন, ‘অপহরণ ও জেলেদের ফিরে আসার বিষয়ে কেউ থানায় অবহিত করেননি। সাধারণত জেলেরা নিজেরাই এসব ঘটনা গোপনে মিটিয়ে নেন। তবে পুলিশ বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’