Tuesday 09 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা একমাত্র বিএনপির পক্ষেই সম্ভব: তারেক রহমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৫২

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক অগ্রগতির রেকর্ড একমাত্র বিএনপিরই আছে এবং জনগণকে দায়িত্ব দেওয়া হলে দলটি আবারও এই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসকে সামনে রেখে এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান তার পোস্টে দুর্নীতিকে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি, শিক্ষার নিম্নমান, এবং সড়কে নিরাপত্তাহীনতাসহ বিভিন্ন সমস্যার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি মেধার ভিত্তিতে চাকরিপ্রত্যাশী একজন গ্র্যাজুয়েট, সাধারণ সরকারি সেবা পেতে হিমশিম খাওয়া কৃষক, স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ভোগান্তিতে থাকা তরুণ পরিবার এবং ঘুষ দিতে বাধ্য হওয়া উদ্যোক্তাদের উদাহরণ টেনে দুর্নীতির ভয়াবহতা তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

তারেক রহমান দাবি করেন, বিএনপি’র শাসনামলে দুর্নীতি দমনে বাস্তব অগ্রগতি হয়েছিল।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রশাসনের শৃঙ্খলা ফেরানো, পরিচ্ছন্ন সরকারি সেবা নিশ্চিত করা এবং অর্থনীতিকে মুক্ত করার পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন, যা অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার কমিয়ে দিয়েছিল।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সময়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে আধুনিকায়ন, নতুন ক্রয় নীতিমালা, কঠোর আর্থিক আইন, শক্তিশালী অডিট ব্যবস্থা এবং পরিষ্কার নজরদারির কথা তুলে ধরা হয়।

তিনি সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হিসেবে ২০০৪ সালে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠনের কথা উল্লেখ করেন, যাকে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি জবাবদিহিতার বড় অগ্রগতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল।

তিনি সে সময়কার টিআইবির জরিপের উল্লেখ করেন। যেখানে বলা হয়, ২০০২ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছিল এবং সাধারণ মানুষ নিজেই দুর্নীতি কমার কথা বলেছিল।

পোস্টে বিএনপি আমলের প্রধান সংস্কারগুলো তুলে ধরা হয়। তারেখ রহমান উল্লেখ করেন, বিএনপির গর্ব করতে পারে ১, বাজেট নিয়ন্ত্রণ, অডিট, ব্যাংকিং এবং মানি লন্ডারিং-বিরোধী আইন। ২, স্বচ্ছ ক্রয় নীতি: প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র এবং নিয়মের মধ্যে সরকারি ক্রয়, যা পরবর্তীতে দেশের সবচেয়ে বড় স্বচ্ছতার আইনের ভিত্তি তৈরি করে। ৩, উন্মুক্ত বাজার: টেলিকম, মিডিয়া, বিমান পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, যা দুর্নীতি কমায় এবং সাধারণ মানুষের সুযোগ বাড়ায় এবং ৪, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: প্রশাসনকে আরও সহজ, কম ইচ্ছাধীন ও মানুষের কাছে জবাবদিহি করার প্রক্রিয়া।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগামী দিনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধকে আরও শক্তভাবে চালানোর জন্য বিএনপির বিস্তারিত পরিকল্পনা ঘোষণা করেন—

প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা: আদালত, দুদক, নির্বাচন কমিশনসহ সব প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত থাকা নিশ্চিত করা।

পূর্ণ স্বচ্ছতা: উন্মুক্ত দরপত্র, সম্পদ বিবরণী, রিয়েল-টাইম অডিট ও শক্তিশালী তথ্য অধিকার আইন।

ই-গভর্ন্যান্স: লাইসেন্স, জমি, পেমেন্টসহ সমস্ত সেবা অনলাইনে আনা (ঘুষের সুযোগ ৩০–৬০% কমানোর লক্ষ্য)।

হুইসেলব্লোয়ার সুরক্ষা: অনিয়ম ফাঁসকারীকে নিরাপত্তা প্রদান।

বিচার ও আইনশৃঙ্খলা সংস্কার: পেশাদার পুলিশিং ও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি।

নৈতিক শিক্ষা: স্কুল-কলেজের পাঠ্যসূচিতে সততার চর্চা অন্তর্ভুক্ত করা।

তারেক রহমান বলেন, বহু বছর অব্যবস্থাপনার পর এই লড়াই কঠিন হবে, কিন্তু “বাংলাদেশের ইতিহাসই প্রমাণ করে, যখন সৎ নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জনগণের সমর্থন একসাথে আসে, তখন পরিবর্তন অসম্ভব নয়।”

সারাবাংলা/এফএন/ইআ
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর