Monday 08 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বীরমুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে হত্যা
অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের আসামি করে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:৩৯

রংপুরে বীরমুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে হত্যা। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর: জেলার তারাগঞ্জে বীরমুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) ও তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে (৬০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

নিহত যোগেশের বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় বাদী হয়ে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে তারাগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, রাতের অন্ধকারে বাড়িতে ঢুকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে সাতটায় প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে মই বেয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে ডাইনিং রুমে যোগেশের এবং রান্নাঘরে সুবর্ণার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে মরদেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোমবার দুপুরে গার্ড অব অনার শেষ করে দম্পতির সৎকার সম্পন্ন হয়, যাতে শত শত মানুষ অংশ নেন এবং স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিজ্ঞাপন

এদিন তারাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ‘মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্তকার্য চলছে। অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের জন্য টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনো বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।’

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ছিনতাই বা পারিবারিক শত্রুতা কারণ হতে পারে, যদিও এলাকায় কোনো সুনির্দিষ্ট শত্রুতার খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা নতুন ইউএনওকে বরণ করতে যোগেশকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেদিনই মরদেহ লাশ উদ্ধার হয়। বিজয়ের মাসে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে হত্যা লজ্জাজনক। আমরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোনাব্বর হোসেন বলেন, ‘সোমবার সকালে সরেজমিন তদন্ত করে যোগেশের বাড়ি ঘুরে এসেছি। ঘটনার তদন্তে প্রশাসন পুলিশের পাশে আছে।’

উল্লেখ্য, নিহত যোগেশ চন্দ্র রায় ছিলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় যোদ্ধা। তার দুই ছেলে বড় ছেলে শোভেন জয়পুরহাটে এবং ছোট ছেলে রাজেশ ঢাকায় পুলিশে কর্মরত। গ্রামের বাড়িতে শুধু দম্পতিই থাকতেন।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর