খুলনা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, রাষ্ট্র ও জীবনকে সুখ ও শান্তিময় করতে ইসলামী অনুশাসন প্রয়োজন। রাষ্ট্রে ইসলামী আইন চালু হলে সকল ধর্মের বর্ণের গোত্রের মানুষ সুখে-শান্তিতে থাকবে। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, টেন্ডারবাজি, দখলদারিত্ব থাকবে না। একমাত্র ইসলামই সকল মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে পারে। তাই আগামী নির্বাচনে সারাদেশে ইসলামপন্থী লোকদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে রাষ্ট্রে সকল মানুষের সুখ ও শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে খুলনা-৫ আসনের আটরা-গিলাতলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত মহিলা ভোটার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ইসলাম প্রতিষ্ঠায় পুরুষের পাশাপাশি নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। হযরত সুমাইয়া (আ.) ছিলেন মহিলা সাহাবীদের মধ্যে প্রথম শহিদ। আম্মাজান আয়েশা (রা.)ও যুদ্ধের ময়দানে অংশগ্রহণ করেছেন। তাই ন্যায়, ইনসাফ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণে আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিদিন সকাল বিকেল গ্রুপ করে করে মহিলা অঙ্গনে দাড়িপাল্লা মার্কার দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। একদিকে পুরুষরা পুরুষদের কাছে অন্যদিকে নারীরা নারীদের কাছে ইসলামী রাষ্ট্র গড়তে দাড়িপাল্লা মার্কার দাওয়াত দেবেন এবং সাধারণ মানুষ যাতে ভুলভাল কোন মার্কায় ভোট না দেয়ে সেটা বুঝাবেন। তাহলে আমরা আপনারা সবাই মিলে ইসলামী রাষ্ট্র গড়তে পারব ইনশাআল্লাহ।
জান্নাতের টিকেট বিক্রি করা নিয়ে বিরোধীদের অপপ্রচারের জবাবে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘জামায়াত কখনো মানুষের কাছে জান্নাতের টিকেট বিক্রি করেনা। তবে মহান আল্লাহ সৃষ্টি করে আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার জন্য গাইডলাইন পবিত্র কুরআনুল কারীম পাঠিয়েছেন। কুরআনে আল্লাহ আমাদের জানিয়েছেন কোন কাজগুলি করা উচিত আর কোনগুলি বর্জন করতে হবে। আমরা মানুষের কাছে সেই কথাগুলি তুলে ধরি। বিরোধীরা কুরআন না বোঝার কারণে কুরআন না পড়ার কারণে তারা এই কথাগুলি বলে থাকে।’
বিভিন্ন স্থানে তালিম প্রোগ্রামে বিএনপি নেতা কর্মীদের বাধা দেওয়ার কথা তুলে ধরে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলছে। আওয়ামী লীগ ইসলামী গণজাগরণ ঠেকাতে যেমন বিভিন্ন সময় জামায়াত-শিবিরকে কখন রাজাকার, কখনো জঙ্গি ট্যাগ দিত ঠিক তেমনি বিএনপি এখন সেই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তারা বর্তমানে মাহফিলে বাধা দেয়, মা-বোনদের তালিম প্রোগ্রামে বাধা দেয়। এটি করে তারা জামায়াতকে নয় মূলত ইসলামকে বাধাগ্রস্ত করছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এবার সুযোগ এসেছে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিন। যেখানে দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী আছে সেখানে দাঁড়িপাল্লার প্রার্থীকে, আর যেখানে ইসলামী জোটের প্রার্থী আছে সেখানে জোটের প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে।
একটি দলের নাম উল্লেখ না করেই তিনি অভিযোগ করেন, ওই দলের মহাসচিব বলেছেন ইসলামী শরীয়ার আইন তারা কায়েম করবে না। তারা বলে কুরআনে রাজনীতির কথা নেই। কিন্তু কুরআনের পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা ছাড়া তা বোঝা সম্ভব নয়।
মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, ইসলামী জোটের লক্ষ্য হলো কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠা করা এবং এর জন্য জনগণের সমর্থন প্রয়োজন।
ওয়ার্ড সভাপতি মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারি সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল গাওসুল আযম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্যা। সেক্রেটারি মো. কামরুল গাজীর পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন খানজাহান আলী থানা আমীর ডা. সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটো, সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদ মামুন, জামায়াত নেতা মো. সুলতান মাহমুদ, মো. মোশারফ হোসেন, নূর ইসলাম গাজী, মো. রানা আকুঞ্জীসহ অন্যান্যরা।