Sunday 07 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আইটি ব্যবসার আড়ালে সিসা বিক্রি, ১৮ কেজি সিসাসহ গ্রেফতার ২

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:২৮ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:১২

গ্রেফতার আসামিরা।

ঢাকা: রাজধানীতে একটি আইটি ব্যবসার আড়ালে গোপনে অনলাইনে সিসা বিক্রি করছিল একটি চক্র। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের ছাড় এবং সিসার মানের গ্যারান্টি দিত। একপর্যায়ে ডিএনসির টিম ক্রেতা সেজে ১৮ কেজি সিসাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ এসব তথ্য জানান।

গ্রেফতার আসামিরা- ডেলিভারিম্যান সামি ও এ চক্রের মূল নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল আলিম ওয়াসিফ (২৮)।

গুলশান ও বনানীসহ কয়েক জায়গায় সিসাবার রয়েছে। এসবের অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে মো. হাসান মারুফ বলেন, ‘দেশে কোনো সিসাবারের অনুমোদন নাই। আমরা যে ১৮ কেজি সিসা জব্দ করেছি সেটি বিগত ৬ বছরের মধ্যে আমাদের বড় সাফল্য।’

বিজ্ঞাপন

সিসা চিহ্নিত করার বিষয়ে প্রশ্নে করা হলে হাসান মারুফ বলেন, ‘গ্রেফতাররা স্বীকার করেছে যে এগুলো সিসা। তবে এসব কেমিক্যাল টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৬ নভেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে ১৮ কেজি সিসা, একাধিক হুক্কা সেট, সিসা সেবনে ব্যবহৃত চারকোল, সিসিটিভি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে চক্রের মূল নিয়ন্ত্রকসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজধানীর বিভিন্ন সিসাবারে কঠোর নজরদারি ও অভিযান চালানোর ফলে চক্রগুলো এখন নতুন কৌশলে অনলাইন অর্ডার, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ ও গোপন ডেলিভারি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সিসা সরবরাহ করছে। এই প্রবণতা বন্ধে ডিএনসি বিশেষ গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।’

মহাপরিচালক বলেন, ‘চক্রটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনবক্স ও মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে অর্ডার নিত। ছদ্মবেশে ক্রেতা সেজে ডিএনসি সদস্যরা প্রথমে চক্রের একজন ডেলিভারিম্যান মো. আশিকুর রহমান সামি (১৯) এর সঙ্গে যোগাযোগ করে হাতিরঝিল এলাকায় পণ্য ডেলিভারির সময় ও স্থান নির্ধারণ করেন। গত ১৬ নভেম্বর রাত ১১টায় হাতিরঝিল মহানগর প্রকল্প এলাকায় সামি সিসার জারভর্তি ব্যাগ নিয়ে উপস্থিত হলে ডিএনসি দল তাকে ছদ্মবেশী ক্রেতার ফাঁদে ফেলে আটক করে। তার স্কুলব্যাগ তল্লাশিতে ২ কেজি আল ফকের সিসা পাওয়া যায়। সে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনলাইন অর্ডার অনুযায়ী সিসা সরবরাহের ডেলিভারি বয়, এবং সে শুধু একাই নয় এটির পিছনে একাধিক ব্যক্তি কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘সামির দেওয়া তথ্য যাচাই করে উত্তর বাড্ডার বিটিআই প্রিমিয়াম প্লাজায় অবস্থিত ‘ইনোভেট’ দোকানটিকে চিহ্নিত করে এবং সেদিন রাতেই দোকানে সন্দেহজনক কার্যকলাপ নিশ্চিত হলে দোকানের মালিক মো. আব্দুল আলিম ওয়াসিফকি গ্রেফতার করে।

তিনি জানান, পরবর্তীতে স্টোর রুম তল্লাশি করে ১৬ কেজি আল ফকর, ৩টি হুক্কা সেট, ২টি পাইপ, চারকোল ১০ প্যাকেট, আইফোন-১৩ ও ৫টি ওয়াইফাই সিসিটিভি ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়। তিনি অনলাইনে অর্ডার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সিসা সরবরাহ করতেন এবং সামি তার হয়ে ডেলিভারি দিত বলে জিজ্ঞাসাবাদে ওয়াসিফ স্বীকার করেন। সে দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গোপনে সিসা সরবরাহ করত এবং তার একটি নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল।

গ্রেফতার দুই আসামির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর