ঢাকা: সরকারি কেনাকাটায় সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সবধরনের সরকারি কেনাকাটায় অনলাইনে দরপত্র আবেদন অর্থাৎ ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গত রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) নতুন এ বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ ও কার্যকর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০১১ সালে সরকারি ক্রয়ের জন্য ই-জিপি সিস্টেম চালু করা হয়। তবে চালু হলেও বিপিপিএ’র তথ্য মতে, সরকারের বার্ষিক ক্রয়ের প্রায় ৩৫ শতাংশ কাগজের দরপত্রের মাধ্যমে সম্পন্ন হতো। নতুন অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে কাগজে দরপত্র জমা দেওয়ার দীর্ঘদিনের প্রথার অবসান হলো।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ (বিপিপিএ) -এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালে প্রকাশিত পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্টে (পিপিএ) আনা সংশোধনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে নতুন পিপিআর ২০২৫ তৈরি করা হয়েছে। ‘পিপিআর২০২৫’ জারি হওয়ার পূর্বদিন পর্যন্ত যে সকল ক্রয়কারী তাদের ক্রয়কার্যের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি বা আগ্রহ ব্যক্তকরণের অনুরোধপত্র জারি করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে আগের ‘পিপিআর ২০০৮’ প্রযোজ্য হবে। ‘পিপিআর ২০২৫’ জারি হওয়ার তারিখে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ও দরপত্র দলিল জারি হওয়ার পূর্বাবস্থায় কোনো ক্রয়কারী ক্রয়ের যে ধাপেই থাকুক না কেন, তাদেরকে ‘পিপিআর ২০২৫’ অনুসরণে ক্রয়কার্যের সকল ধাপ প্রতিপালন করতে হবে।
বিপিপিএ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, নতুন বিধিমালা দেশের সরকারি কেনাকাটা সংস্কারের ইতিহাসে মাইলফলক।
নতুন সরকারি ক্রয়নীতিতে ১৫৪টি বিধি ও ২১টি তফসিল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে অভ্যন্তরীণ কেনাকাটায় ১০ শতাংশ মূল্যসীমা বাতিল করা হয়েছে। এ মূল্যসীমা অনুযায়ী, পণ্য বা সেবার প্রাক্কলিত মূল্যের চেয়ে একজন ঠিকাদার সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বেশি বা কম দর দেওয়ার সুযোগ পেতেন। এরচেয়ে বেশি বা কম হলে সেই দর বাতিল হতো। এ ছাড়া চুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রকৃত উপকারভোগীর (বেনিফিশিয়ারি ওনারশিপ) তথ্য প্রকাশ বাধ্যবাধকতার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি ক্রয়ে টেকসই কেনাকাটা করতে হবে। সরকারি প্রতিটি কেনাকাটায় কৌশলগত পরিকল্পনা প্রস্তুত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নতুন বিধিমালায় আরও বলা হয়, ভৌত সেবাকে স্বতন্ত্র প্রকিউরমেন্ট ক্যাটাগরি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এ ছাড়া কাঠামো চুক্তি (ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট) দর–কষাকষির ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করতে হবে। যেকোনো কেনাকাটার পরিকল্পনা বাতিলের জন্য একটি ডেবারমেন্ট বোর্ড (বাতিল করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত বোর্ড) প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ ছাড়া সম্পদ নিষ্পত্তিসংক্রান্ত স্পষ্ট বিধান তৈরি করতে হবে।