ঢাকা: উত্তরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কে. এম. মামুনুর রশিদ নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পার হলেও এখনো তার কোনো সন্ধান মেলেনি। এ নিয়ে সরকারের ভূমিকা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “গত ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মামুনুর রশিদ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এটি চরম উদ্বেগজনক ও ভীতিকর পরিস্থিতি। ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে এ ধরনের ঘটনা সম্ভবত এই প্রথম।”
তিনি অভিযোগ করেন, “একজন নাগরিকের ন্যূনতম নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র। সরকারের গাফিলতির কারণেই ঘটনার দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। একইসাথে গণমাধ্যমের নীরবতা নতুন করে ভয়ের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার শঙ্কা তৈরি করছে।”
এদিকে মামুনুর রশিদের সন্ধান না পেয়ে বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন তার পরিবার ও সাবেক সহকর্মীরা।
মানববন্ধনে মামুনের স্ত্রী খাদিজা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার স্বামীকে ছাড়া আমরা অসহায়। আমার সন্তান সারাক্ষণ তার বাবার কথা বলে। কেন তাকে গুম করা হলো? আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই।” তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মামুনের বাবাও সমাবেশে ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আকুতি জানান।
বক্তব্যে ঢাকা-১৮ আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “চব্বিশ-পরবর্তী বাংলাদেশকে আমরা গুম-খুনের বাংলাদেশ দেখতে চাই না। প্রশাসনকে স্পষ্টভাবে বলছি—২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামুনকে ফিরিয়ে আনতে হবে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির সাবেক মুখ্য সমন্বয়ক রাফিদ এম ভূঁইয়া সতর্ক করে বলেন, “মামুন ভাই গুম হওয়া মানে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর সরাসরি আঘাত। আমরা প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে মামুন ভাইকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে, নইলে উত্তরা বিএনএস সেন্টার অবরোধ করা হবে।”
উল্লেখ্য, গত রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে রাজধানীর তুরাগ থানার হানিফ আলী মোড়ের নিজ বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন মামুনুর রশিদ। জুলাই আন্দোলনে উত্তরা এলাকায় তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন।