Monday 29 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মনোনয়নপত্র জমা
সাঈদ আল নোমান বললেন— জনসেবার শপথ নিলাম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৩১ | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৩২

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন সাঈদ আল নোমান। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, খুলশী ও হালিশহর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাঈদ আল নোমান বললেন, জনগণের সেবার শপথ নিলাম, শপথটা যেন আমি শেষদিন পর্যন্ত মনে রাখি।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

সাঈদ আল নোমান বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমানের সন্তান। দলমত, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলের কাছেই গ্রহণযোগ্য নোমান চট্টগ্রামে ‘রাজনীতির বরপুত্র’ হিসেবে খ্যাত ছিলেন। ষাটের দশকে বাম রাজনীতির মধ্য দিয়ে উঠে আসা নোমান ১৯৮১ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে যোগ দিয়েছিলেন বিএনপিতে। সেই থেকে শুরু। আশি-নব্বইয়ের দশক এবং এর পরবর্তী আরও অন্তত এক দশক চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতি আবর্তিত হয়েছে আবদুল্লাহ আল নোমানকে ঘিরেই।

বিজ্ঞাপন

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আবদুল্লাহ আল নোমানের জীবনাবসান ঘটে। আমৃত্যু তিনি বিএনপির সঙ্গেই ছিলেন। সর্বশেষ তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নোমানের মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা সক্রিয় রাজনীতিতে টেনে আনেন সাঈদ আল নোমানকে। তিনি জাতীয়তাবাদী পাট শ্রমিক দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। চট্টগ্রাম-১০ আসনে নিয়মিত রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তিনি। উচ্চশিক্ষিত সাঈদ আল নোমান চট্টগ্রামে তার বাবার প্রতিষ্ঠিত ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান।

আবদুল্লাহ আল নোমান ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বর্তমানে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দু’বারই মন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি ওই আসনের পরিবর্তে চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে মনোনয়ন নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি ওই আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন।

আবদুল্লাহ আল নোমানের অবর্তমানে তার উত্তরসূরী সাঈদ আল নোমানের ওপরই আস্থা রেখেছে বিএনপির হাইকমান্ড। বাবার আসনেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ছেলেকে। তবে সাঈদ আল নোমান মনে করেন, এ মনোনয়নের মধ্য দিয়ে তার কাঁধে একটি গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছে তার দল বিএনপি।

মনোনয়ন পত্র দাখিলের পর সাঈদ আল নোমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজনীতি, মনোনয়ন, নির্বাচন- এগুলো আমার কাছে শুধু ক্ষমতার আবাহন নয়। আমি মনে করি, মনোনয়নপত্র দাখিলের মাধ্যমে কিংবা এ মনোনয়ন পাবার মাধ্যমে আমার কাঁধে একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ভর করে বসল। আমি দেশবাসী এবং চট্টগ্রামের মানুষের কাছে দোয়া চাই, সমর্থন চাই। আমি মনে করি মনোনয়ন পত্র দাখিলের মাধ্যমে আমরা আজ জনগণের সেবার শপথ নিচ্ছি। আমি যেন ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরভাবে প্রচার চালিয়ে যেতে পারি এবং জনগণ যদি আমাকে বিজয়ী করেন, তাহলে আমি যেন যে সেবার শপথ আজ নিলাম, সেই সেবার দায়িত্ব ও কর্তব্যটা সুচারুরূপে পালন করতে পারি। সেবার শপথটা যেন আমি শেষদিন পর্যন্ত মনে রাখি এবং দায়িত্বটা পালন করে যেতে পারি, এতটুকুই আমি বলব।’

‘এর বাইরে জয়-পরাজয়ের কোনো চিন্তা আমার মাথায় আসছে না। আমার মাথায় শুধু জনসেবার বিষয়টাই আসছে। কারণ, জনসেবা হচ্ছে পলিটিক্সের এক্সটেনশন অথবা উল্টোভাবে বললে পলিটিক্স হচ্ছে জনসেবারই একটা এক্সটেনশন। আমি যদি জনসেবাটা সুন্দরভাবে করতে পারি, তাহলে পলিটিক্সের সিংহভাগ কাজ হয়ে যাবে।’

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে তো আগাম কিছু বলা যায় না। তবে আজ পর্যন্ত যা দেখছি, মানুষ অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে। তার একটি লক্ষণ আমরা দেখেছি গত ২৫ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবিসংবাদিত নেতা তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে কোটিখানেক মানুষ কীভাবে এত সুশৃঙ্খলভাবে একত্রিত হল এবং আনন্দ করল, আমার কাছে এটা একটা বিস্ময়। এর মধ্যেই আছে আগামী নির্বাচনের বার্তা। আমি মনে করি, নির্বাচনের পরিবেশ খুবই সুন্দর থাকবে যদি-না আমরা কোনো ষড়যন্ত্রে পড়ে যাই।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর