ঢাকা: ভারতের কনসার্ন বা কোনো ‘আনহোলি নেক্সাস’ ম্যানেজ করে ক্ষমতায় যেতে চান না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শহিদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মিডিয়া, বিরোক্রেসি কিংবা মিলিটারিকে নিয়ন্ত্রণ করে কিংবা পাশের দেশ ভারতের কনসার্ন মাথায় রেখে আমরা কোনোভাবে ক্ষমতায় যেতে চাই না।’
ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই, কিন্তু তা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। কোনো গোপন সমঝোতা বা নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার মাধ্যমে নয়। জনগণ যদি আমাদের ম্যান্ডেট দেয় এবং যোগ্য মনে করে, তবেই আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই।’
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, ‘জনগণের প্রত্যাশা ও অংশগ্রহণ ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো আগ্রহ তাদের নেই।’
এদিকে জবানবন্দি শেষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘২০২৪ সালের ১৬ জুলাই সারাদেশে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। ওই দিন রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের হামলায় ওয়াসিম নিহত হন। একই দিনে সারাদেশে ছয়জন শিক্ষার্থী শহীদ হন।’
তিনি জানান, এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে ১৭ জুলাই গায়েবানা জানাজার আয়োজন করলে গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয়। ওই রাতেই তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে পদ্মা নদীর এলাকায় নেওয়া হয় এবং কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দেওয়া হয়। তবে তারা মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করতে অস্বীকৃতি জানান।
হাসনাত দাবি করেন, বৈঠকে ব্যর্থ হয়ে তাদের মৎস্য ভবনের সামনে একটি ‘সেফ হাউসে’ নেওয়া হয়। মৎস্য ভবন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মাঝামাঝি ওই জায়গাটি বাইরে থেকে পরিত্যক্ত মনে হলেও ভেতরে আধুনিক ব্যবস্থাপনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘‘সেখানে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, পরিবারকে জিম্মি করার চেষ্টা চালানো হয় এবং স্থানীয় ছাত্রলীগ দিয়ে পরিবারকে হয়রানি করা হয়। এমনকি আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে রাজি হলে ‘জীবন সেটেল করে দেওয়া’র প্রস্তাবও দেওয়া হয়। তবে তারা কোনো প্রস্তাবেই রাজি হননি।’’