গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে কর্মরত ৩৭টি সাহায্য সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছে ইসরায়েল, কারণ তারা নতুন নিবন্ধন নিয়মের শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, অ্যাকশনএইড, আন্তর্জাতিক রেসকিউ কমিটি এবং নরওয়েজিয়ান শরণার্থী কাউন্সিলের মতো পরিচিত আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাগুলোর (আইএনজিও) লাইসেন্স ১ জানুয়ারি থেকে বাতিল করা হবে। ৬০ দিনের মধ্যে তাদের কার্যক্রম শেষ হবে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, অন্যান্য শর্ত ছাড়াও এই সংস্থাগুলো তাদের কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য হস্তান্তর করেনি তাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যুক্তরাজ্যসহ ১০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, এই নতুন নিয়মগুলো ‘অগ্রহণযোগ্য’।
এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, জাপান, নরওয়ে, সুইডেন এবং সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন যে আইএনজিও এর কার্যক্রম জোর করে বন্ধ করলে স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রয়োজনীয় মানবিক সাহায্য প্রবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
তারা আরও বলেছেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি এই মুহূর্তে ‘ভয়াবহ বিপর্যস্ত’। তাই তারা ইসরায়েলের সরকারকে আইএনজিওগুলোকে আরও ‘টেকসই উপায়ে’ কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
নিবন্ধনের আবেদনের দায়িত্বে থাকা ইসরায়েলের প্রবাসী বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, নতুন শর্তগুলো গাজায় মানবিক সহায়তাকে প্রভাবিত করবে না। জাতিসংঘের সংস্থা, দ্বিপাক্ষিক অংশীদার এবং ত্রাণ সংস্থাগুলো অনুমোদন নিয়ে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।
মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানানো হয়েছে, সাহায্য সংস্থাগুলোর লাইসেন্স বাতিলের প্রধান কারণ হলো তারা তাদের কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য ইসরায়েল সরকারকে দিতে রাজি হননি। তাই সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
গাজায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা ব্রিটিশ চিকিৎসক ডক্টর জেমস স্মিথ আল জাজিরাকে বলেছেন, সাহায্য সংস্থাগুলোর ওপর এই নির্মম নিষেধাজ্ঞা ভয়াবহ মানবিক সংকটকে আরও ভয়াবহ করে তুলবে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৭১,২৬৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৭১,২২২ জন আহত হয়েছে। ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালের হামলায় ইসরায়েলে মোট ১,১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জনকে বন্দী করা হয়েছিল।