ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা পারমাণবিক কর্মসূচি আবার শুরুর চেষ্টা করলে দেশটিতে নতুন করে বড় ধরনের সামরিক হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, আমি খবর পাচ্ছি, তারা আবারও অস্ত্র মজুত করছে। আমি আশা করি, তারা এমন কিছু করবে না। কারণ, আমি আরেকটি বি-২ যুদ্ধবিমানের জ্বালানি নষ্ট করতে চাই না।
রয়টার্সে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ওই হুমকি দেন।
একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে অবিলম্বে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অন্যথায় তাদের ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ বিমান হামলার পর তেহরান সম্ভবত গোপনে তাদের অস্ত্র কর্মসূচি পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘আমি খবর পাচ্ছি, তারা আবারও অস্ত্র ও সরঞ্জাম মজুত করছে। তারা ঠিক কোথায় কী করছে, তা আমাদের নখদর্পণে। আমি আশা করি, তারা এমন কিছু করবে না। কারণ, আমি আরেকটি বি-২ যুদ্ধবিমানের জ্বালানি নষ্ট করতে চাই না।’
ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর এ বৈঠকে গাজায় ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি, ইরান এবং লেবাননে হিজবুল্লাহ সম্পর্কে ইসরায়েলি উদ্বেগের সমাধান নিয়েও আলোচনা করা হয়।
এরই মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ধাপে গাজায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে হামাস অস্ত্র সমর্পণে অস্বীকৃতি জানানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘গাজায় প্রায় প্রতিদিনই কমপক্ষে ৪০০ জন করে নিহত হওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েল চুক্তির শর্ত মেনে চলছে, কিন্তু হামাস তা করছে না। অস্ত্র সমর্পণ না করলে তাদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা হামাস এবং তাদের নিরস্ত্রীকরণ নিয়েও কথা বলেছি। তাদের নিরস্ত্রীকরণের জন্য খুব অল্প সময় দেওয়া হবে এবং আমরা দেখব তারা কতটুকু সেটা পালন করে।’
নিরস্ত্রীকরণে রাজি না হলে তার পরিণতি কী হবে তা নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি হামাস নিরস্ত্রীকরণের শর্ত না মানে, তাহলে তাদের নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। এবং আমরা তা চাই না।’
হামাসের পক্ষ থেকে অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
এদিকে বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় জিম্মি থাকা সর্বশেষ ইসরায়েলি সেনার মরদেহ ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত তিনি রাফা সীমান্ত খুলবেন না এবং চুক্তির পরবর্তী ধাপেও যাবেন না।
সিরিয়া ও লেবানন পরিস্থিতি নিয়েও দুই নেতার মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প জানান, গাজায় তুর্কি শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা যায় কি না, সে বিষয়ে তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলবেন।