অস্ট্রিয়ার পার্লামেন্টে ১৪ বছরের কম বয়সী স্কুলছাত্রীদের জন্য হিজাব নিষিদ্ধ করার আইন পাস হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দ্য গার্ডিয়ান প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা ও মুসলিম সম্প্রদায়ের আপত্তি সত্ত্বেও পাস হওয়া এই আইন সমাজে বিভাজন আরও বাড়াবে এবং মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রান্তিক করবে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে রক্ষণশীল নেতৃত্বাধীন সরকার আইনটি প্রস্তাব করে। ভোটের আগের দিন ক্ষমতাসীন জোটের অংশ লিবারেল নিয়স দলের সংসদীয় নেতা ইয়ানিক শেটি বলেন, ‘এটি স্বাধীনতা সীমিত করার জন্য নয়, বরং ১৪ বছর পর্যন্ত মেয়েদের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য।’
তার দাবি, হিজাব শুধু পোশাক নয়, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি মেয়েদের পুরুষের দৃষ্টি থেকে আড়াল করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা আগামী সেপ্টেম্বরের নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর হবে। আইন ভঙ্গ করলে পরিবারকে বারবার অপরাধের ক্ষেত্রে ৮০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।
২০১৯ সালে ১০ বছরের নিচের মেয়েদের জন্য হিজাব নিষিদ্ধ করা হলে সাংবিধানিক আদালত সেটিকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। সরকার জানিয়েছে, এবার তারা আগের ভুল সংশোধন করে আইনটি তৈরি করেছে। তবে ইয়ানিক শেটি নিজেও স্বীকার করেছেন—আইনটি আদালতে টিকবে কি না তা নিশ্চিত নন।
ভোটে একমাত্র বিরোধিতা করেছে গ্রীন পার্টি, যারা আইনটিকে সংবিধানবিরোধী বলছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা মনে করছে, এ আইন মেয়েদের ক্ষমতায়ন করবে না; বরং অস্ট্রিয়ায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান বর্ণবাদকে আরও উসকে দেবে।
মহিলা অধিকার সংগঠন ‘আমাজোন’-এর অ্যাঞ্জেলিকা অ্যাটজিঙ্গার বলেন, ‘আইনটি মেয়েদের কাছে ভুল বার্তা দিচ্ছে—তাদের শরীর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তাদের নয়।’