আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সুদানের সাউথ করদোফান রাজ্যের কালোগিতে আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)–এর ভয়াবহ হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪৬ জন শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এই হত্যাযজ্ঞ ঘটে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) কালোগির নির্বাহী পরিচালক আল–জাজিরাকে জানান, এর আগের হিসাব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ছিল ৭১। তবে বিভিন্নস্থানে নতুন করে মরদেহ উদ্ধারের পর সংখ্যাটি দ্রুত বেড়েছে।
সরকার–সমর্থিত সুদানিজ আর্মড ফোর্সেস (এসএএফ) সূত্রে আল–জাজিরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আরএসএফ প্রথম হামলা চালায় একটি কিন্ডারগার্টেনে। সেখানে শিশুদের উপস্থিতির মধ্যেই নির্বিচারে গোলাবর্ষণ চালানো হয়।
পরবর্তীতে যখন স্থানীয় মানুষ এবং স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধারকাজে এগিয়ে যান, তখন তাদের ওপরও দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। এতে প্রাণহানি আরও বাড়ে।
এ ছাড়া শহরের হাসপাতাল এবং একটি সরকারি ভবনেও বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করে।
সুদানে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন উয়েত বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে শিশুদের হত্যা করা শিশু অধিকারের চরম লঙ্ঘন। যুদ্ধরত সব পক্ষকে অবিলম্বে এই সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিশুদের কখনোই সংঘাতের মূল্য দিতে হওয়া উচিত নয়।’
সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেসামরিক মানুষ ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে ধারাবাহিক হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।
রাজধানী খার্তুম থেকে আল–জাজিরার হিবা মরগান জানিয়েছেন, প্রাথমিক হিসেবে যে সংখ্যাটি পাওয়া গিয়েছিল, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ হতাহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসাসেবা ঠিকমতো পাচ্ছে না—এ কারণেই মৃত্যুহার বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০২৩ সাল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। দেশের কেন্দ্র ও পূর্বাঞ্চল সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পশ্চিমাঞ্চলে, বিশেষ করে উত্তর করদোফান ও দারফুর এলাকায় প্রভাব বাড়াতে চাইছে আরএসএফ। দীর্ঘ সংঘাতে কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।