চট্টগ্রাম ব্যুরো: গির্জায়-গির্জায় মহা খ্রিস্টযাগের মধ্য দিয়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মূল ধর্মীয় উৎসব বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বিশেষ প্রার্থনা, খ্রিস্টীয় গান, শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে যিশুর আগমন উদযাপন করছেন তারা। দেশ-জাতির সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় নগরীর পাথরঘাটা রাণী জপমালা গির্জায় ইংরেজিতে মহা খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। একই গির্জায় মধ্যরাত ১২টায় বাংলায় খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সম্মিলিত প্রার্থনায় পৌরহিত্য করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আর্চবিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার।
পাথরঘাটা গির্জায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় আরেকদফা বাংলায় খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সন্ধ্যায় গির্জা প্রাঙ্গনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কেক কাটা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের উপস্থিতিতে সর্বধর্মীয় সম্মিলন হবে।
লরেন্স সুব্রত হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের এই দেশ যেন শান্তিতে থাকে, আমরা যেন সবাই একে অন্যের মাঝে শান্তি ছড়িয়ে দিতে পারি, এটাই প্রার্থনা। প্রভু যিশু এই পৃথিবীতে এসেছেন শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য, ভালোবাসার জন্য। এই ভালোবাসা যেন আমরা একে অন্যকে দেখাতে পারি।’

নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার আরসি চার্চ, পাহাড়তলীর গির্জা, জুবিলি রোড চার্চ, বোয়ালখালীর গোমদণ্ডীতে ক্যাথিড্রাল চার্চ এবং আনোয়ারা দেয়াঙ পাহাড়ের খ্রিষ্টানদের উপাসনালয়ে বড়দিনের প্রার্থনা হয়েছে। প্রত্যেক প্রার্থনায় প্রভু যীশুর কীর্তির কথা তুলে ধরে গোন পরিবেশন করা হয়েছে।
এদিকে মুক্তিদাতা যীশুর মুক্তির বারতা নিয়ে ধরায় আগমনের দিনটিকে ঘিরে চট্টগ্রামে গির্জার পাশাপাশি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ঘরে-ঘরে যথারীতি উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। হোটেল-রেস্তোঁরায়ও উৎসবের ছোঁয়া। যীশুর গোয়াল ঘর, ক্রিসমাস ট্রি, ক্রিসমাস বল, ঢোল, নানা রঙের পুতুল- বড়দিনের সাজ ঘরে ঘরে। হোটেল-রেস্তোঁরায় বাহারি খাবারের অফার, শিশুদের কেক কাটাসহ নানা আনন্দ আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বড়দিন উপলক্ষ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও জেলা পুলিশ। নগরীর ১৬টি থানা এবং জেলার ১৫টি থানার আওতাভুক্ত বিভিন্ন গির্জায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গির্জা এলাকায় চেকপোস্ট বসানোর পাশাপাশি টহল জোরদার করা হয়েছে।